
ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা
চাঁপাইনবাগঞ্জে বিরূপ আবহাওয়ায় পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে কেটে রাখা ধান জমিতেই পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চলতি বছরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও বিরূপ আবহাওয়ায় ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এতে করে ক্ষেতেই শীষ থেকে ঝরে পড়ছে পাকা ধান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত দুই সপ্তাহ ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাজুড়ে ধান কাটার কাজ শুরু হয়েছে। মাড়াই শেষে রোদে শুকিয়ে কৃষকরা ধান ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত। তবে কৃষকের এ কর্মযজ্ঞে বাগড়া দিয়েছে কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত। এতে করে খেতেই ঝরে পড়ছে পাকা ধান। বৃষ্টি শুরুর আগে কিছু কৃষক ধান কাটতে পারলেও সেগুলো মাড়াই ও রোদে শুকাতে না পেরে চরম বিপাকে পড়েছেন ।
কৃষকরা বলছেন, চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষাবাদে গত বারের তুলনায় খরচ বেশি হয়েছে। এ বছর টানা খরার কারণে সেচ বালাইনাশক বেশি প্রয়োগ করতে হয়েছে। এতে বাড়তি খরচ হলেও ফলন সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। ঘরে ধান তোলার সময় বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা।
তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বৃষ্টির কারণে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হলেও অর্ধেকের বেশি ধান কাটা হয়ে গেছে। তবে কিছু কিছু জায়গার ধান বৃষ্টির পানিতে ভাসতেও দেখা গেছে। সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগে প্রায় আড়াই বিঘা জমির ধান কেটে মাঠেই জড়ো করেছি। বৃষ্টির কারণে আরও এক বিঘা জমির ধান কাটতে পারিনি। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় কেটে রাখা ধানগুলো এখনো মাড়াই করতে পারিনি। বৃষ্টির পানিতে মাঠ কাদা হয়ে যাওয়ায় ট্রলিচালক যেতে চান না মাঠে।
একই এলাকার আরেক কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ধান কেটে মাঠেই জমা করা আছে। বৃষ্টির কারণে মাড়াই করতে পারছি না।
শিবগঞ্জের কৃষক নাইমুল ইসলাম বলেন, ধান কেটে শুকিয়ে পালা করে রেখেছি। বৃষ্টির পানিতে মাঠ কাদা হয়ে গেছে। যার কারণে ধান মাড়াইয়ের কাজ করা যাচ্ছে না।
কৃষক সাইদুল আলী বলেন, বৃষ্টিতে ধান মাড়াই করা যাচ্ছে না। ধান পানিতে ভিজে যাচ্ছে। সময়ের মধ্যে ধান মাড়াই করতে না পারলে গেজে যাবে। ফলে ধানগুলো নষ্ট হয়ে যাবে ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. ইয়াছিন আলী বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ৪৭ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে অর্ধেকেরও বেশি জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। বৃষ্টির জন্য ধান কাটা ও মাড়াই করতে সমস্যা হচ্ছে কৃষকদের।