
ছবি: সংগৃহীত
আজ ২১ মে, বিশ্ব চা দিবস। চা–ভক্তদের জন্য এক বিশেষ দিন এটি। চাইলে বন্ধু–পরিবারের সঙ্গে বসে যেতে পারেন এক কাপ চায়ের আড্ডায়। কিংবা নিজের প্রিয় স্টলে গিয়ে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা পান করে দিনটা উদযাপন করতে পারেন।
সকালে ঘুম ভাঙার পর কিংবা কাজের ক্লান্তিতে আমাদের সবারই যেন একটাই ভরসা—এক কাপ চা। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা পৃথিবীতেই চা একটি অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়।
প্রতি সেকেন্ডে ২৫,০০০ কাপ চা!
গবেষণা অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ২৫ হাজার কাপ চা পান করা হয়। অর্থাৎ প্রতিদিন চায়ের কাপের সংখ্যা ছাড়িয়ে যায় দুই বিলিয়ন!
চায়ের ইতিহাস ও বিশ্ব দিবসের সূচনা
২০০৫ সালে চা উৎপাদনকারী কিছু দেশ—শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, মালয়েশিয়া ও উগান্ডা—একত্র হয়ে প্রথমবার পালন করে আন্তর্জাতিক চা দিবস। পরে ২০১৯ সালের ২১ মে এই দিনটিকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব চা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আর ২০২০ সাল থেকে ২১ মে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক চা দিবস।
চায়ের ইতিহাসও খুবই প্রাচীন। ধারণা করা হয়, ৫ হাজার বছর আগে চীনে চায়ের উৎপত্তি। একটি লোককথা অনুযায়ী, এক চীনা সম্রাট গাছতলায় বসে গরম পানি পান করছিলেন। হঠাৎ কিছু শুকনো পাতা পড়ে গেল পানির কাপটিতে। সেই পানীয় পান করেই তিনি মুগ্ধ হয়ে যান। এভাবেই চায়ের যাত্রা শুরু।
ক্যামেলিয়া সাইনেনসিস—যা থেকে আসে চা
চায়ের পাতার উৎস একটি বিশেষ গাছ—Camellia Sinensis। এই গাছের পাতা থেকেই তৈরি হয় আমাদের পরিচিত চা। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে এশিয়ায় শুরু হয় গরম চা পানের রেওয়াজ। কিন্তু ইউরোপে চা প্রবেশ করে অনেক পরে—ষোড়শ শতকে।
১৬০০ সালের পর ইংল্যান্ডে চায়ের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ব্রিটিশদের হাত ধরে ভারতে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি শুধু একটি পানীয় নয়, বরং বিশ্বব্যাপী একটি শিল্প হয়ে ওঠে।
ভবিষ্যতেও বাড়বে চায়ের জনপ্রিয়তা!
বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চা পানকারীর সংখ্যাও বাড়ছে। বিশেষ করে ভারত ও চীন—এই দুটি দেশই চায়ের দুনিয়ায় বড় ভূমিকা রাখছে। এই দুই দেশের মানুষই বিশ্বের ৩৭ শতাংশ চা পান করে।
চা শুধু একটি পানীয় নয়—এটি অনেকের কাছে একটি অনুভূতি, একান্ত সময়ের সঙ্গী, আবার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডার উপলক্ষ। তাই এই বিশ্ব চা দিবসে, নিজের প্রিয় কাপটা হাতে নিয়ে একটু সময় দিন নিজেকে আর প্রিয়জনকে।
আলিফ