
এক দশক আগে দুর্নীতি থেকে দায়মুক্তি পেলেও শেষ রক্ষা হলো না স্বাস্থ্য প্রকৌশল
এক দশক আগে দুর্নীতি থেকে দায়মুক্তি পেলেও শেষ রক্ষা হলো না স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঢাকার সার্কেল-১ এর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আনোয়ার আলী ও তার পরিবারের।
ইতোমধ্যে স্ত্রী, ভগ্নিপতিসহ এই প্রকৌশলীকে আসামি করে চার্জশিট দিয়েছে দুদক। এরপরই আয় বহির্ভূত ৫ কোটি ৭২ লাখ ৪ হাজার ৭৯৬ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জনের তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার দুদকের জনসংযোগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দুদক জানায়, ২০০২ সালে দুর্নীতি দমন ব্যুরোর আমলে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। দীর্ঘদিন ধরে দুদকে ওই অভিযোগ পড়েছিল। ২০১৫ সালে দুদকের পক্ষ থেকে তাকে নোটিস দিয়ে নথিপত্র চাওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সাল পর্যন্ত তার আয়-ব্যয়ের নথি পর্যালোচনা করে দুদক। শেষে কোনো অনিয়ম না পেয়ে অভিযোগটি নিষ্পত্তি করা হয়। পরবর্তীতে একই অভিযোগে দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা করেন ২০১৯ সালের ৫ মে। এরপর আবার শুরু হয় অনুসন্ধান। মামলাটির অনুসন্ধান করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান।
প্রায় ৬ বছর পর দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা, দণ্ডবিধির ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ ইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় চার্জশিট দাখিলের সুপারিশ অনুযায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুদকের চার্জশিটে তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হচ্ছে, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঢাকার সার্কেল-১ এর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আনোয়ার আলী, তার স্ত্রী দিলরুবা আলী (৫৩) এবং ভগ্নিপতি মো. মিজানুর রহমান (৭২)।
দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আইনের চোখকে ফাঁকি দিতে প্রকৌশলী মো. আনোয়ার আলী নিজের নামে অবৈধ সম্পদ না গড়ে স্ত্রীর নামে গড়েছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামি দিলরুবা আলী দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৩ কোটি ২৬ লাখ ১৮ হাজার ৮৫৮ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রদর্শন করেন।
তদন্তকালে তার নামে ৭ কোটি ২৭ লাখ ৫৫ হাজার ৭৪৫ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে তিনি দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৪ কোটি ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৮৭ টাকা মূল্যের অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রদান করেছেন। আসামি দিলরুবা আলীর বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া যায় মাত্র ১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৯ হাজার ১১৫ টাকার। তদন্ত অনুযায়ী তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ পাওয়া যায় মোট ৫ কোটি ৭২ লাখ ৪ হাজার ৭৯৬ টাকা।
এছাড়া তদন্তে দিলরুবা আলীর ভগ্নিপতি মো. মিজানুর রহমান বিভিন্ন জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আসামি দিলরুবা আলীর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তার মাধ্যমে মো. আনোয়ার আলীর অবৈধ সম্পদ আসামি দিলরুবা আলীর নামে বৈধ দেখিয়ে মানিলন্ডারিং অপরাধে সহযোগিতা করার বিষয়টিও উঠে আসে।