
নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন
পবিত্র ঈদুল আজহায় নৌপথে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঈদের আগের তিনদিন ও পরের সাতদিন দিন-রাতে সার্বক্ষণিক সব ধরনের বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। এছাড়া ঈদযাত্রায় নৌপথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং ধারণ ক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কোনো অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ নৌ চলাচল এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এক সভায় এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান নৌ-উপদেষ্টা। সভায় নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দপ্তর বা সংস্থার প্রধানগণ, জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, “প্রত্যেক লঞ্চের নির্ধারিত স্থানে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার রেট চার্ট প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রায়শই অভিযোগ শোনা যায় ঈদের সময় যাত্রী সাধারণকে জিম্মি করে নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে প্রায় দেড় বা দুই গুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
আসন্ন ঈদে এ ধরনের অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সদরঘাট বা অন্যান্য ঘাটে যাদের ইজারা দেওয়া হয়েছে তারা যাত্রীদেরকে কোনোরূপ হয়রানি করতে পারবেন না। কোনো অতিরিক্ত চার্জ আদায় করতে পারবে না। ঈদকে সামনে রেখে ঈদ উল আজহার আগে ৩ দিন এবং পরের ৩ দিন নিত্য প্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ব্যতীত সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ রাখা হবে।
এছাড়া নৌপথে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং উদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য উদ্ধারকারী জলযান প্রস্তুত থাকবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, যাত্রী সাধারণের নিরাপদ চলাচল সকল নদীবন্দর, টার্মিনাল ও ঘাটে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। জেলা প্রশাসকগণ টাস্কফোর্স গঠনপূর্বক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন।
তিনি বলেন, “দূরপাল্লাগামী লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চারজন করে আনসার সদস্য নিয়োগের জন্য মালিকপক্ষকে বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে কোনো দুর্ঘটনা সংগঠিত হলে মালিকপক্ষ দায়ী থাকবে। আনসার সদস্যদেরকেও তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। লঞ্চে বা ফেরিঘাটে কর্মরত স্টাফদের নির্ধারিত ইউনিফর্ম এবং আইডি কার্ড থাকতে হবে।
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, বরিশালের মেঘনা নদীসহ যে সকল অপরাধপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে কোস্টগার্ড, নৌপুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষ টহল থাকবে।৩০ মে হতে ১৪ জুন পর্যন্ত ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্মুক্ত রাখতে হবে বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “কোনোভাবেই রাস্তার ওপরে যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না। সংশ্লিষ্ট পুলিশ বাহিনী বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করবে।
প্রয়োজনে রেকার দিয়ে অভিযুক্ত বাসগুলোকে সরিয়ে দিতে হবে।” ঈদযাত্রার প্রস্তুতি দেখতে উপদেষ্টা সদরঘাটসহ নৌরুটের বিভিন্ন স্পটে আকস্মিক পরিদর্শনে যাবেন বলে সাংবাদিকদের অবহিত করেন। যথাসময়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তরকে তিনি অনুরোধ জানান।