
ছবি: সংগৃহীত
বাসার বারান্দা কিংবা ছাদে গাছ লাগানো আজকাল শুধু শখ নয়, বরং এটি একটি জীবনধারার অংশ হয়ে উঠেছে। তবে যত্নের অভাবে কিংবা কিছু সাধারণ ভুলের কারণে গাছ মারা যেতে পারে কিংবা বিকশিত হতে পারে না। গাছের সঠিক যত্ন নিশ্চিত করতে হলে কিছু বিষয় জানা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু ভুল গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
গাছপালা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও বোটানিস্ট ড. নুসরাত জাহান (সহকারী অধ্যাপক, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) বলেন, “গাছও একটি প্রাণী, তারও প্রয়োজন আছে আলো, পানি ও পুষ্টির। অনেক সময় আমরা ভালোবাসা থেকে যত্ন নিতে গিয়ে এমন কিছু করি, যা গাছের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।”
আসুন জেনে নিই সেই মারাত্মক ৫টি ভুল যা গাছের সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে:
১. অতিরিক্ত পানি দেওয়া
অনেকেই ভাবেন, বেশি পানি দিলে গাছ ভালো থাকবে। বাস্তবে এটি গাছের শিকড় পচিয়ে ফেলে। ড. নুসরাত বলেন, “গাছের মাটি স্পঞ্জের মতো আচরণ করে, অতিরিক্ত পানি দিলে সেটি বাতাসের জায়গা দখল করে নেয়। ফলে শিকড় শ্বাস নিতে পারে না।”
করণীয়: মাটি শুকিয়ে গেলে তবেই পানি দিন। পাত্রে ড্রেনেজ হোল থাকা বাধ্যতামূলক।
২. আলো-পানির ভারসাম্য না রাখা
সব গাছের আলো প্রয়োজন একরকম নয়। ছায়াপ্রিয় গাছে অতিরিক্ত সূর্যালোক দিলে তা ঝলসে যেতে পারে।
উপদেশ: গাছ কেনার সময় জেনে নিন সেটি আলো ও ছায়া কোনটায় ভালো বেড়ে ওঠে।
৩. ভুল সার প্রয়োগ
যথাযথ পরিমাণ ও সময়ে সার না দিলে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে। আবার অতিরিক্ত সারও গাছের শিকড় পুড়িয়ে ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞ পরামর্শ: জৈব সার ব্যবহার করুন এবং মাসে একবার বা দুই মাস পরপর প্রয়োগ করুন।
৪. নিয়মিত ছাঁটাই না করা
গাছের বাড়তি ডালপালা ও শুকনো পাতা না কাটলে গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। ড. নুসরাত বলেন, “ছাঁটাই করলে গাছ নতুন কুঁড়ি গজাতে উৎসাহিত হয় এবং সুস্থ থাকে।”
৫. একই মাটিতে বছরের পর বছর গাছ রাখা
মাটি বারবার ব্যবহার করলে তা থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নিঃশেষ হয়ে যায়। ফলে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ে।
করণীয়: বছরে অন্তত একবার মাটি পাল্টান অথবা মাটিতে জৈব সার মিশিয়ে তা পুনর্জীবিত করুন।
শেষ কথা:
গাছের যত্ন নেওয়া যেমন একটি ধৈর্যের কাজ, তেমনি সঠিক জ্ঞান প্রয়োগের বিষয়ও বটে। ভালোবাসা যেমন গাছ বাঁচায়, তেমনি ভুল যত্ন তাদের ধ্বংসের দিকেও নিয়ে যেতে পারে। তাই যত্নের পাশাপাশি সচেতন হোন, গাছও বাঁচবে, প্রকৃতিও সুন্দর থাকবে।
আসিফ