রাজশাহীর তানোরে নিখোঁজের ২০ দিন পর শিব নদ থেকে এক যুবকের বস্তাবন্দী হাড়গোড় উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার উপজেলার হাবিবনগর এলাকায় কচুরিপানার ভেতর লাশভর্তি বস্তাটি দেখতে পান স্থানীয় কয়েকজন। পরে পুলিশ গিয়ে তা উদ্ধার করে।
নিহত ওই যুবকের নাম চিত্তরঞ্জন পাল (২৬)। সে তানোর উপজেলার হাবিবনগর পালপাড়া গ্রামের মনোরঞ্জন পালের ছেলে। পরিবারের সদস্যরা জানান, বস্তার ভেতরে থাকা কঙ্কালটির পরনে ছিল একটি লুঙ্গি ও গেঞ্জি। এসব দেখে তারা লাশ শনাক্ত করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিহত চিত্তরঞ্জন পাল অনার্স পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। একই গ্রামের কলেজছাত্রীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছেন তাঁর বাবা মনোরঞ্জন পাল। তিনি অভিযোগ করেন, প্রেমিকার বাবা স্বপন পাল ও তার ছেলেরা এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি। একাধিকবার তারা চিত্তরঞ্জনকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। চিত্তরঞ্জন নিখোঁজ হওয়ার পরদিনই মনোরঞ্জন পাল তানোর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।
মনোরঞ্জন দাবি করেন, কিছুদিন আগে ওই মেয়েটি তার ছেলেকে একটি চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন যে, তাকে হত্যার পরিকল্পনা চলছে। সেই চিঠি এখনো তাদের কাছে সংরক্ষিত আছে বলেও জানান তিনি। চিত্তরঞ্জনের বাবা আরও বলেন, আমার একমাত্র ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রেমের সম্পর্কের জেরেই তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা দ্রুতই এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, প্রেমঘটিত বিরোধের কারণেই চিত্তরঞ্জন পালকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর তার লাশ বস্তায় ভরে শিব নদে ফেলে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে দুর্গন্ধ ছড়ালে স্থানীয়রা কচুরিপানার ভেতরে বস্তাটি দেখতে পান। পরে খবর পেয়ে আমরা লাশটি উদ্ধার করি।
ওসি আরও জানান, লাশটি ২০ দিন পানির মধ্যে থাকায় মাংস পচে কেবল হাড়গোড় অবশিষ্ট ছিল। পোশাক দেখে পরিবারের সদস্যরা লাশ শনাক্ত করেছেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
নোভা
