
শান্তিরহাট বটতলী গজারিয়া খালের ওপর কাঠের নির্মিত সেতু
একটি পাকা সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ৩০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। স্বাধীনতার অর্ধশত বছর পরও তাদের ভরসা একটি কাঠের সাঁকো। আশ্বাস আর পরিমাপে সীমাবদ্ধ রয়েছে এই সেতু নির্মাণের দাবি। এমপি আসেন এমপি যান কিন্তু চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের শান্তিরহাট বটতলী গজারিয়া খালের ওপর কাঠের নির্মিত ১০৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে সাঁকোটির কোনো পরিবর্তন নেই। সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, দাঁতমারা ইউনিয়নের গহিরা-রামগড় আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম পাশে বৃহত্তর বেতুয়া, কাঞ্চনা, দাওয়াতের টিলা, বান্দর মারা, পানিঘাটা, নলুয়ার টিলা, কাঞ্চনা রাবার অফিস, মুজাহিদপুর, চুরামনি ও ঘর কাটা গ্রামের লোকজন এই কাঠে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। এসব এলাকায় রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয় চারটি, জামে মসজিদ ৩৫টি, নূরানী মাদ্রাসা ১৫টি ও ছোট বাজার ছয়টি।
এই পথে সাঁকো পার হয়ে শান্তিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, শান্তিরহাট মিশকাতুন নবী দাখিল মাদ্রাসা, দাঁতমারা এবিজেড সিকদার উচ্চ বিদ্যালয়, দাঁতমারা মইনুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা, নারায়ণহাট আদর্শ ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও দাঁতমারা, শান্তিরহাট, নারায়ণহাট ও হেঁয়াকো বাজার, মসজিদ, ব্যাংক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বর্ষায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন হাজারো পথচারীকে এই সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বছরের পর বছর পার করে দিচ্ছেন। সাঁকোর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে স্কুল-মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা। অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া জন্য শান্তিরহাট অথবা দাঁতমারা হয়ে এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে ৯-১০ কিলোমিটার দূরের পথ পাড়ি দিতে হয়। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে কয়েকটি ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় সেদিকে যাতায়াতও এখন বন্ধ। যাতায়াতের অভাবে ভেঙে যাচ্ছে বহু ছেলে-মেয়ের বিয়ে। সম্বন্ধ করতে অনীহা অন্য এলাকার মানুষের।
সাঁকো সংলগ্ন দোকানদার সমীর পাল বলেন, আমি গত ৮ বছর যাবত এখানে ব্যবসা করি। স্বচক্ষে দেখেছি সাঁকো পারাপার হতে গিয়ে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। খুদে শিক্ষার্থীদের জন্য যেন এটা একটা মরণফাঁদ! কাঞ্চনা গ্রামের বাসিন্দা মো কাউসার বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এখনো এই খালের ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সেতু নির্মিত হলেই এলাকাবাসীর জন্য যাতায়াত ব্যবস্থাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হাকিম বলেন, ‘আমরা এলাকাবাসীকে নিয়ে উপজেলায় বারবার ধরনা দিয়েছি। উপজেলার পিআইও জানিয়ে ছিলেন তাদের ৫০ ফুটের অধিক দৈর্ঘ্যরে কোনো সাঁকোর বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগ নেই। ১০৫ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এই সাঁকোটির আবেদন জেলা পরিষদ বরাবর করতে হবে। জেলা পরিষদই পারবেন এই সাঁকোটির বরাদ্দ দিতে।’
প্যানেল