
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের কদমতুলি হতে তাতুয়াকান্দি সড়কের কবরস্থানের কাছে ঢোলভাঙ্গা নদীর উপর
কালভার্টটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। কালভার্টটির সংস্কারের অভাবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।কয়েকবছর আগে মূল কালভার্টের ঢালাই ভেঙ্গে যাওয়ায় এখন লোহার পাটাতন দিয়ে জুড়াতালি দিয়ে চলছে। এখন সে-ই পাটাতনেও ৩টি সৃষ্ট বড় বড় গর্ত ও এক অংশ দেবে যাওয়ার ফলে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাবাসী কালভার্টির ওপর দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। গর্তগুলো এতোটাই বড় হয়ে গেছে, সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে। তাছাড়া কালভার্টের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে কোনো ধরনের সতর্কতা সংকেত টাঙানো হয়নি। এর উপর দিয়ে যানবাহনে পারাপারের সময় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার আতংকে থাকেন। এছাড়া বিপাকে পড়ছেন অটোবাইক, মোটরসাইকেল, টেম্পো, রিকশা, ভ্যানসহ চলাচলকারী বাহনের যাত্রীরা।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৪ সালে কদমতুলি - তাতুয়াকান্দি অংশে এই কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। প্রতিদিন সোনারামপুর, মরিচাকান্দি, দরিয়াদৌলত, পাহাড়িয়াকান্দি, নতুন কদমতুলি, তাতুয়াকান্দি সহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে শত শত মানুষ দুর্ঘটনার শঙ্কা মাথায় নিয়ে রাতদিন চলাচল করছেন। ব্রিজটির পাটাতনে সৃষ্ট বেশকয়েটি গর্ত ও এক অংশ বসে যাওয়া ফলে অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রায়শই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন মানুষ। তাই দ্রুত সংস্কার করা না হলে ঘটে যেতে পারে বড়ধরনের দুর্ঘটনা। ভুক্তভোগীরা দ্রুত কালভার্টের সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী গোলাম কাদের বলেন, বিগত ৬ মাস ধরে এই গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে বর্তমানে সেতুটি অত্যান্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এর উপর দিয়ে রাতদিন শত শত মানুষ যাতায়াত করছে। এটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় প্রায়শই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি দ্রুত ব্রিজটি সংস্কারে দাবি জানিয়েছেন।
এই ভাঙ্গাচুরা কালভার্ট দিয়ে যাতায়াতকারী মমিন উদ্দীন নামে এক ভ্যানচালক জানান, প্রায় ৫/৬ মাস ধরে দেখছি এই গর্ত। ভ্যানের চাকা গর্তে পড়ে কয়েকদিন আগে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। আমার ভ্যানে থাকা যাত্রীও আহত হয়েছেন। রাতে এই অংশ আরো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই ব্রিজে নতুন চলাচলকারীরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে প্রাণহানিও ঘটতে পারে! যদি বড়ধরনের কোনও দুর্ঘটনা ঘটে যায়, তাহলে কে দায় নেবে?
স্কুলপড়ুয়া রাকিব হাসান নামের এক শিক্ষার্থী জানান, প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সৃষ্ট গর্তের অংশে পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে যেতে হয়। প্রায়দিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে, যারা জানেই না এখানে ঝুঁকিপূর্ণ, তারাই বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তাই এ ব্রিজটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।
সমাজ সংগঠক আলাউদ্দিন সরকার বলেন, এক হাতে প্রাণ আরেক হাতে প্রয়োজন নিয়ে নিত্যদিন এই মরণফাঁদ কালভার্টের উপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) জাহাঙ্গীর হোসেন মুঠোফোনে বলেন, এটি ব্রীজ নয়, কালভার্ট। কালভার্টের জন্য সরকার থেকে প্রতিবছর আলাদা বরাদ্দ আসে। এবছর সেটি এখনো আসেনি। আসার পর, যতদ্রুত সম্ভব মেরামত করা হবে।
রাজু