শহরের ফায়ার ঘাট এলাকার পল্টুন ও সিঁড়ি নড়বড়ে
নারায়ণগঞ্জ শহরের শীতলক্ষ্যা নদীর ফায়ার ঘাট এলাকার পন্টুনের অবস্থা একেবারেই নাজুক। এ ছাড়াও পন্টুনে ওঠার কাঠের সিঁড়ি নড়বড়ে হয়ে গেছে। ফলে এ ফায়ার ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকা ও ট্রলারে উঠে নদী পারাপার হচ্ছেন। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পারাপার হওয়া অসহায় মানুষ। জরুরি ভিত্তিতে পন্টুন ও পন্টুনে ওঠার নড়বড়ে কাঠের সিঁড়িটি পরিবর্তন করার জোর দাবি জানান যাত্রীরা। সরেজিমনে গিয়ে নদীর ঘাটের পন্টুনটি অর্ধডুবন্ত অবস্থায় দেখা গেছে।
জানা যায়, শীতলক্ষ্যা নদীর ফায়ার ঘাটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাট। এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ নদী পার হয়ে বন্দর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে।
শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাড়ে বন্দর উপজেলা ও পশ্চিম পাড়ে নারায়ণগঞ্জ শহর এলাকা। খবর নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন খেয়া নৌকা ও ট্রলার ফায়ার ঘাট থেকে বন্দর থানা ঘাট ও বন্দর থানা ঘাট থেকে ফায়ার ঘাটে লোকজনকে নদী পারাপার করা হচ্ছে। ফায়ার ঘাটের পূর্ব পাড়ে বন্দর উপজেলায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী এ ফায়ার ঘাট দিয়ে নদী পার হয়ে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে। এ ছাড়াও এ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ বন্দর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করছে। এ ঘাটের পন্টুনটি ব্যবহার করে ডালপট্টি এলাকার মালামাল লোড-আনলোড করা হচ্ছে। সব মিলে এ ঘাটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বন্দরের ফরাজীকান্দা এলাকার বাসিন্দা অনিক মিয়া বলেন, কয়েক বছর ধরে ফায়ার ঘাটের নদীর পন্টুনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পন্টুনটি প্রায় সময় অর্ধডুবন্ত অবস্থায় থাকে। পন্টুনে ওঠার কাঠের সিঁড়িটিও একেবারে নড়বড়ে। তবুও আমরা প্রতিদিন জীবনে ঝুঁকি নিয়ে পন্টুন ব্যবহার করে ট্রলারযোগে শীতলক্ষ্যা নদী পারাপার হচ্ছি। এটি দেখার কেউ আছে বলে মনে হয় না।
সোনাকান্দা এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, এ নদীর ঘাটের পন্টুনটি একেবারেই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় পন্টুনটি ডুবে যেতে পারে। এ করুণ অবস্থার মধ্যেও প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এ ঘাট দিয়ে পন্টুন ব্যবহার করে নদী পারাপার হচ্ছেন। এতে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। স্থানীয় শ্রমিক বারেক মিয়া বলেন, এখানাকার পন্টুনটি ছোট আকৃতির। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে পন্টুনটি।
ফায়ার ঘাটের ট্রলার চালক আনারুল মিয়া বলেন, ২৫ বছর ধরে এ ঘাটে ট্রলার চালাচ্ছি। আগে খেয়া নৌকা চালাতাম। বহু বছর ধরে এভাবেই ঝুঁকিপূর্ণ পন্টুন ব্যবহার করেই লোকজন নদী পার হচ্ছেন। কেউ পন্টুনটি মেরামত করছেন না। রাতে পন্টুন ও কাঠের নড়বড়ে সিঁড়িটি আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এ পন্টুন ও কাঠের নড়বড়ে সিঁড়ি ব্যবহার করে ট্রলারে ওঠার সময় নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ লোকজনকে নানাবিধ সমস্যায় পড়তে হয়। এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পন্টুন ও নড়বড়ে সিঁড়ির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিআইডব্লিউটির নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দের আরেক কর্মকর্তা শাহেদুল ইসলাম বলেন, এ পন্টুনটি বিআইডব্লিউটিএর নয়।