ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ড

নিজেকে বাঁচাতে পারলেন না, লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন এমবাসিয়ার কর্মী জুয়েল

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৮:৫১, ১ মার্চ ২০২৪; আপডেট: ১৮:৫৪, ১ মার্চ ২০২৪

নিজেকে বাঁচাতে পারলেন না, লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন এমবাসিয়ার কর্মী জুয়েল

নিহত জুয়েল রানা গাজী

রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে আগুনের ঘটনায় নিহত জুয়েল রানা গাজী (৩০) পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পশ্চিম মধুখালী গ্রামের ইসমাইল গাজীর ছেলে। হতভাগা জীবন বাঁচাতে সাত তলা থেকে নামতে গিয়ে জানালার পাশে এসির ওপর দাঁড়ায়। 

এ সময় নিচে পড়ে গিয়ে মারা যান জুয়েল। জুয়েলের ভাগিনা রাকিব এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ওই ভবনে এমবাসিয়া নামের একটি খাবারের দোকানে জুয়েল কাজ করতেন। 

জুয়েলের মা-বাবা ছাড়াও এক ভাই, তিন বোন রয়েছে। এছাড়া, জুয়েলের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা, ছয় বছরের মেয়ে তাসনিয়া ও তিন বছরের ছেলে তাইফুর রয়েছে। বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। 

শ্রমজীবী পরিবারের ছেলে জুয়েল ও বড় ভাই আল আমিন ঢাকায় কাজ করতেন। প্রায় তিন বছর আগে জুয়েল ঢাকায় যান। মাঝখানে করোনার ধকলে বেকার ছিলেন। 

প্রতিবেশি মতিউর রহমান জানান, ওরা ছাদে ছিল। নিচে আগুন দেখে নামার জন্য জীবন বাঁচাতে জুয়েল রানা ও ভাগিনা রাকিবসহ একজন বাবুর্চি জানালা ভেঙে ওয়াই-ফাইসহ ডিশের বিভিন্ন তার ধরে নিচে নামার পরিকল্পনা করে। প্রথমে রাকিব নিচে নামতে সক্ষম হয়। পরে ওই বাবুর্চি নামেন। এরপর নামার জন্য জুয়েল এসির ওপরে দাঁড়ালে সেটি ভেঙে পড়ে যায়। তার শরীর দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। দরিদ্র সংসারে নিহত জুয়েলের উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল ছিল পরিবারটি।

জুয়েলের মরদেহ শুক্রবার শেষ বিকেলে কলাপাড়ায় বাড়িতে নিয়ে গেলে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণ ঘটে। এলাকার শত শত মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় করে। পরে জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে জুয়েলকে দাফন করা হয়। 

এর আগে কলাপাড়ার ইউএনও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন নিহত জুয়েলের বাবার কাছে সরকারের দেয়া ২৫ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন এবং পরিবারকে সকল ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।
 

এসআর

×