ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

তবুও অচেনা রাধাচূড়া

রাস্তার ধারে গাঢ় রঙিন ফুল, অপরূপ সৌন্দর্যে চোখ আটকে যায়

মোরসালিন মিজান

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রাস্তার ধারে গাঢ় রঙিন ফুল, অপরূপ সৌন্দর্যে চোখ আটকে যায়

ঢাকা-মাওয়া রাস্তার দুই ধারে ফুটে আছে রাধাচূড়া ফুল। দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না

রাধাচূড়া নিয়ে আলাপ জমাতে হলে কৃষ্ণচূড়াকেও লাগবে। কারণ কৃষ্ণচূড়া অনেক বেশি পরিচিত। সারাদেশে দেখা যায়। ঢাকার বিভিন্ন রাস্তার ধারে প্রচুর কৃষ্ণচূড়া গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। লাল রঙের ফুল ফোটা মাত্রই রঙিন হয়ে ওঠে রাজধানী। হ্যাঁ, সৌন্দর্য বর্ধনের চিন্তা থেকেই এত এত কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগানো হয়েছে। একই উদ্দেশ্যে শহরের সড়ক বিভাজকে ব্যাপকহারে লাগানো হয়েছে রাধাচূড়া গাছ। এখন ফুল ফোটার মৌসুম। একসঙ্গে প্রচুর ফুল ফুটে আছে। গাঢ় রঙিন ফুলের দিকে একবার তাকালে চোখ আটকে যায়। কিন্তু সৌন্দর্যে মুগ্ধ হওয়া অনেকেই জানেন না ফুলটির নাম আসলে কী? দ্রুত পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার কারণে এমনটি হতে পারে। হয়তো একই কারণে ফুলের বাগানের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা হয় না। জানা হয় না ফুলের নামটিও। 
বাস্তবে কৃষ্ণচূড়ার সঙ্গে এর অনেক মিল। বিশেষ করে নামের দিক থেকে। একটির নাম কৃষ্ণচূড়া। অন্যটি রাধাচূড়া। যতদূর জানা যায়, শ্রী কৃষ্ণের নাম অনুসারে কৃষ্ণচূড়া নামকরণ করা হয়েছিল। আর রাধাচূড়া নামকরণ করা হয় রাধার নামে। এদিক থেকে দেখলে দুই ফুলের মধ্যে একটি সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় বৈকি। অনেকে সম্পর্কটিকে প্রেমের সম্পর্ক হিসেবেই ব্যাখ্যা করে থাকেন। রাধাচূড়া ফুলের পাপড়ি লাল হলুদ অথবা কমলা রঙের হয়ে থাকে। একটি পাপড়ি আবার অন্য চারটি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়। এত আলাদা যে, ফুলটিকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের করে তুলে।

লাল রঙের রাধাচূড়া হঠাৎ দেখলে কৃষ্ণচূড়া বলেই মনে হবে। অবশ্য রাধাচূড়ার গাঢ় লাল পাপড়িতে হলুদের চমৎকার মিশেল লক্ষ্য করা যায়। এক বা একাধিক পাপড়ির আউট লাইন যেন হলুদ রঙে এঁকে দেয় প্রকৃতি।   
রাধাচূড়া গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। আদিনিবাস ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আমেরিকার উষ্ণ ও ক্রান্তীয় অঞ্চল বলে ধারণা করা হয়। তবে এ তথ্য সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গাছ লম্বায় প্রায় ৩ মিটার পর্যন্ত হয়। পাতা দ্বি-পক্ষল। ২০-৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। তবে ফুলই এর মূল সৌন্দর্য। রাধাচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম সিসালপিনিয়া পালচেরিমা। ল্যাটিন ‘পালচেরিমা’ শব্দের অর্থ ‘সবথেকে সুন্দর।’ এ কারণে মানুষ নয় শুধু, প্রজাপতি মৌমাছিসহ বিচিত্র কীটপতঙ্গ ফুলটি দ্বারা আকৃষ্ট হয়। ছোট ছোট পাখিরাও একে ঘিরে থাকে। 
রাধাচূড়া অত্যন্ত কষ্ট সহিষ্ণু গাছ। উষ্ণম-লীয় আবহাওয়াতে প্রায় সারা বছর ফুল ফোটে। সে তুলনায় ঢাকা তো কমই উষ্ণ। তাই ভালোই আছে এ শহরে। পাশ দিয়ে সাঁই সাঁই করে চলে যাওয়ার সময় গাড়ি আঘাতে ডাল ভেঙে যায়। ফুল আছড়ে পড়ে। তবুও গাছ অস্তিত্ব ধরে রাখতে জানে। একই কারণে উপহার দিতে পারে রঙিন সব ফুল। তা এই ফুলটিকে এবার চেনা হলো তো?

×