তুলশীমালা ধান। ছবি: জনকণ্ঠ
জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) পণ্য হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী তুলশীমালা ধান। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে ডিসি শেরপুর ফেসবুক পেইজে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের রেজিস্টার খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান এনডিসি স্বাক্ষরিত নিবন্ধন সনদ পেয়েছে। এই স্বীকৃতির ফলে তুলশীমালা চাল এখন রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হবে। শেরপুরের অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি ভৌগোলিকভাবে শেরপুরের পরিচিতি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
জানা যায়, সরকার সাধারণত একটি নির্দিষ্ট উৎপত্তিস্থলের কারণে কোনো পণ্যের গুণগত মান নিয়ে খ্যাতি তৈরি হলে তাকে জিআই পণ্যে হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ‘পর্যটনের আনন্দে, তুলশীমালার সুগন্ধে- শেরপুর’-এ জেলা ব্র্যান্ডিং বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন ২০১৮ সালের প্রথমার্ধ থেকে কাজ করছে।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এবার জেলার ৫ উপজেলার ৭ হাজার হেক্টর জমিতে তুলশীমালা ধানের আবাদ করা হয়েছিল। এতে প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হয়েছে। প্রচারের স্বার্থে এবার কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ১ কেজি করে চাল প্যাকেট করে মোট ১১ হাজার প্যাকেট তুলশীমালা চাল বাজারজাত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন কৃষি মেলায় এই চাল সারা দেশের সুনাম কুড়িয়েছে। সেই প্যাকেটের গায়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় তুলশীমালা চালের গুণাগুণ উল্লেখ্য করা হয়েছে, যাতে এই চাল সম্পর্কে সবাই ধারণা অর্জন করতে পারে। এই চাল কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যে কাজ চলছে।
শেরপুর খামার বাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. সুকল্প দাস বলেন, জেলা প্রশাসকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং কৃষি বিভাগের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আজ তুলশীমালা চাল জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলো। তুলশীমালা ধান চাষীদের একটি ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। ক্রেতারা যাতে প্রতারিত না হন সেজন্য জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের তত্বাবধানে তৈরি একটি আকর্ষণীয় মোড়কে তুলশীমালা চাল বাজারজাত করা হচ্ছে। সুগন্ধি ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় এ চালের কদর ও চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার বলেন, জিআই পণ্যে হিসেবে স্বীকৃতির মাধ্যমে আমাদের একটি উদ্যোগের সফল পরিসমাপ্তি ঘটলো। আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তুলশীমালা চাল শেরপুর জেলার জিআই পণ্য হিসেবে শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। আজ নিবন্ধন সনদ হাতে পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে যারা অবদান রেখেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। এ অর্জন শেরপুরের সকল মানুষের।
এসআর
