ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাংলাদেশের আবহাওয়ায় রহস্যময় কাণ্ড, ১৬ বছরেও দেশে এমনটি হয়নি!

প্রকাশিত: ১১:২৯, ২৬ মে ২০২৫

বাংলাদেশের আবহাওয়ায় রহস্যময় কাণ্ড, ১৬ বছরেও দেশে এমনটি হয়নি!

ছবি: সংগৃহীত।

দীর্ঘ ১৬ বছর পর সময়ের আগেই বাংলাদেশে আগমন ঘটেছে মৌসুমী বায়ুর। ২০০৯ সালের পর এবারই প্রথম মে মাসের শেষ দিকে দেশের টেকনাফ উপকূলে এই বায়ু প্রবেশ করেছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, একই দিনে ভারতের কেরালাতেও মৌসুমী বায়ুর আগমনের খবর মিলেছে।

সাধারণত জুনের প্রথম সপ্তাহে উপকূলে মৌসুমী বায়ুর আগমন ঘটে, যা অক্টোবর পর্যন্ত উপমহাদেশজুড়ে প্রভাব বিস্তার করে। তবে এবার এক সপ্তাহ আগেই এর আগমন ঘটায় আবহাওয়ার ধারাবাহিকতায় একটি ব্যতিক্রমী পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

মৌসুমী বায়ুর আগমনের ফলে আগামী কয়েকদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে আবহাওয়াবিদরা সতর্ক করেছেন, দুই-তিনদিন বৃষ্টির পর বৃষ্টিপাত হঠাৎ কমে গিয়ে সৃষ্টি হতে পারে লঘুচাপ। এতে উপকূলীয় এলাকায় আবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও, দেশের কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আগাম বৃষ্টিপাত ডেঙ্গুর মতো রোগের প্রকোপ বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও পরে তীব্র তাপদাহ এডিস মশার বংশবিস্তারে সহায়ক হওয়ায় স্বাস্থ্য খাত বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে রেকর্ডসংখ্যক মৃত্যু হয়েছে, যা এবারও পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা তৈরি করছে।

তবে আশার কথা হচ্ছে, আগাম মৌসুমী বায়ু কৃষি খাতে বড় ক্ষতি ডেকে আনবে না বলে মত দিয়েছেন কৃষিবিদরা। কারণ হাওর এলাকায় ধান কাটা ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে এবং সারাদেশেই ধান গোলায় উঠেছে। ফলে অতিরিক্ত বৃষ্টির ঝুঁকি কিছুটা কমে গেছে।

এছাড়া, আমের উৎপাদনেও এই বৃষ্টিপাত ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে ফজলি, আম্রপালি, আশিনী ও বাড়ি-চার জাতের আমের ওজন ও উৎপাদন বৃদ্ধির আশা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃষ্টির কারণে গাছের ধুলাবালি ও কীটনাশক ধুয়ে যাওয়ায় ফলের মানও উন্নত হতে পারে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, মৌসুমী বায়ু দক্ষিণ এশিয়া এবং ভারতীয় মহাসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে প্রভাবশালী মৌসুমী প্রবাহ। এটি কৃষি, স্বাস্থ্য ও জনজীবনে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে।

এই আগাম আগমন একদিকে যেমন স্বস্তির বার্তা, তেমনি প্রস্তুতিরও আহ্বান জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট খাতগুলোকে।

নুসরাত

×