
ছবি আলজাজিরা
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ অধিবেশনে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মানসুর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল শুধু ক্ষুধা নয়, এখন সাহায্যকেও যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
রিয়াদ মানসুর তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই যুদ্ধের বোমাবর্ষণে নিষ্ঠুরতা আছে, ধ্বংসযজ্ঞে নিষ্ঠুরতা আছে, অবরোধে নিষ্ঠুরতা আছে — এমনকি সীমিত পরিসরে সাহায্য বিতরণেও নিষ্ঠুরতা আছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জিজ্ঞেস করা হবে — যখন আমরা দুর্ভিক্ষ আর অনাহারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছিলাম, তখন তো এখন অন্তত কিছু খাদ্য আসছে, এ নিয়েই আবার অভিযোগ কেন? কিন্তু প্রশ্ন হলো, আমাদের সামনে কি এই দুটি বিকল্পই থাকবে? একদিকে সম্পূর্ণ অবরোধ, যেখানে ১০ লাখ শিশুসহ সমগ্র বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে খাদ্য, পানি, ওষুধ, আশ্রয় থেকে বঞ্চিত করা হয়—অথবা এমন এক সহায়তা ব্যবস্থা, যা অবমাননাকর, বৈষম্যমূলক, শুধু খাদ্যে সীমিত এবং যার লক্ষ্য জনগণকে জোরপূর্বক বিতাড়ন ও অবৈধভাবে জমি দখল সহজ করে তোলা।
মানসুর বলেন, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা খোলাখুলিভাবে নিজেদের এই উদ্দেশ্য প্রকাশ করছেন। কোনো সন্দেহ নেই যে, তাদের উদ্দেশ্য কী—কারণ তারা নিজেরাই একের পর এক বিবৃতিতে, হুমকিতে তা স্পষ্ট করে দিচ্ছে। আগে যেমন ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল, এখন দেখা যাচ্ছে যে সহায়তাও অস্ত্র হয়ে উঠেছে। তাহলে কি আমরা চুপ থাকব, কারণ ‘বিকল্পটা আরও ভয়ানক’? না কি আমরা উঠে দাঁড়াব, ফিলিস্তিনিদের মানবতা এবং যেকোনো সশস্ত্র সংঘাতে বেসামরিক মানুষের অধিকার রক্ষার পক্ষে?
তিনি বলেন, যে দৃশ্য আমরা দেখছি—ক্ষুধার্ত, মরিয়া মানুষগুলো যেভাবে নিজেরা বন্দী অবস্থান থেকে বেরিয়ে এসে সাহায্যের খোঁজে ছুটছে—তা হৃদয়বিদারক। তারা মানুষ, প্রাণে বেঁচে থাকার শেষ চেষ্টায় লেগে থাকা মানুষ। তাদের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে কেড়ে নেওয়া হয়েছে খাদ্য, পানি, ওষুধ।
এই বক্তব্যের মাধ্যমে রিয়াদ মানসুর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইসরায়েলের যুদ্ধনীতি ও মানবিক সহায়তা ব্যবস্থার নামে পরিচালিত ‘বৈষম্যমূলক ও দমনমূলক’ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন।
এসএফ