
হিম শীতেও কর্মব্যস্ত শ্রমজীবী মানুষ। ছবি: জনকণ্ঠ
মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আর তীব্র ঠাণ্ডায় নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছে দেশের সর্ব উত্তরের হিমালয় কন্যা খ্যাত জেলা পঞ্চগড়ের জনজীবন। হিম শীতল বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টির মতো হালকা ঝড়ে পড়া ঘন কুয়াশা ঠাণ্ডাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
সোমবার (৯ জানুযারি) দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্য উঁকি দিলেও উত্তরের কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে সূর্যের কিরণ তেমন একটা উত্তাপ ছড়াতে পারেনি।
জেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে সকাল দশটা পর্যন্ত অনেক স্থানেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শরীরে উষ্ণতা দেয়ার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। পৌষের শেষ সপ্তাহের শীতে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে মানুষের জীবনযাত্রা। পশু-পাখির জুবুথুবু অবস্থা। বিকাল হলে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে বরফগলা ঠাণ্ডা বাতাসে জনজীবনে দুর্বিসহ অবস্থার সৃষ্টি করছে। সন্ধ্যার আগেই শহর ও গ্রামের হাটবাজারগুলো ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য মতে, সোমবার সকাল ৯টায় ছিল এ মৌসুমের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা। এদিন ৭ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন বলে জানা গেছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পৌষের শেষ কটা দিন তাপমাত্রা আরও কমবে। এর মধ্যে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার মীরগড় গ্রামের বয়বৃদ্ধ জাফরুল্লাহ বলেন, গত কদিন ধরে চলা ঠাণ্ডায় শরীর অবশ হয়ে আসছে। সকাল দশটা পর্যন্ত ঘরের বাইরে বের হতে কষ্ট হচ্ছে।
স্কুল শিক্ষিকা রমজিনা আকতার রেমি বলেন, কনকনে শীত আর কুয়াশার কারণে সকাল নটায় স্কুল যেতে খুবই কষ্ট হয়। শিক্ষার্থীরাও সঠিক সময়ে স্কুলে উপস্থিত হতে পারছে না।
তীব্র ঠাণ্ডার কারণে শীতজনিত রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মনোয়ারুল হোসেন বলেন, তীব্র ঠাণ্ডার কারণে শিশু ও বয়ঃবৃদ্ধ লোকজন শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে।
গত দু সপ্তাহ জুড়ে চলা ঘন কুয়াশার কারণে বুধবারও ভারী যানবাহনগুলো লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।
এসআর