ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

শিরোপার আরও কাছে মোহামেডান

রুমেল খান

প্রকাশিত: ০১:০৬, ৩ মে ২০২৫

শিরোপার আরও কাছে মোহামেডান

মোহামেডানের জয়ের নায়ক নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড ইমানুয়েল সানডের (বাঁয়ে) গোল উদ্যাপন, শুক্রবার কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে

বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে সফল দল ‘ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট’ খ্যাত দেশের ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমল মিলিয়ে তারা সবচেয়ে বেশি ১৯ বার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ লিগ শিরোপা জিতেছে কবে, এটা হয়ত অনেক মোহামেডান সমর্থকই স্মরণ করতে পারবেন না।

উত্তরটা হচ্ছেÑমতিঝিলপাড়ার ক্লাবটি ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরের শিরোপা শেষবার জিতেছে সেই ২০০২ সালে! তবে দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ পর আবারও প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার গন্ধ পাচ্ছে সাদা-কালো শিবির। শুক্রবার তারা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে সহজ জয় কুড়িয়ে নেওয়ার মাধ্যমে শিরোপার পথে আরেকটু এগিয়ে গেল।

কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে তারা বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবকে ৩-১ গোলে হারায়। এছাড়া ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বসুন্ধরা কিংস ২-০ গোলে ঢাকা আবাহনী লিমিটেডকে এবং গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব ১-০ গোলে হারিয়েছে ফর্টিস ফুটবল ক্লাবকে। 
প্রথম পর্বের দেখায় পুলিশকে একই ব্যবধানে হারিয়েছিল আলফাজ আহমেদের শিষ্যরা। এই জয়ে ১৩ ম্যাচে ১১ জয় ও এক ড্রয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই আছে মোহামেডান। দুইয়ে থাকা আবাহনীর চেয়ে ৭ পয়েন্ট এগিয়ে তারা। সমান ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আছে সার্ভিসেস সংস্থা পুলিশ। 
হারলেও ম্যাচের প্রথমার্ধ তো বটেই, পাক্কা ৫১ মিনিট পর্যন্ত মোহামেডানকে আটকে রেখেছিল পুলিশ। ৫২ মিনিটে গোলের খাতা খোলে মোহামেডান। মেহেদী হাসান মিঠুর ক্রসে দূরের পোস্টে থাকা নাইজিরিয়ার ফরোয়ার্ড এমানুয়েল সানডে লাফিয়ে উঠে হেডে বল জালে পাঠান (১-০)। ৬৫ মিনিটে সমতায় ফিরে পুলিশ। বক্সে দীপককে পেছন থেকে ফাউল করেন মেহেদী। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। আর তা থেকে লক্ষ্যভেদ করেন পুলিশের ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড দানিলো অগোস্তো (১-১)। 
৮৫ মিনিটে মিনহাজুর রাকিবের ফ্রি কিকে বক্সে গোলমুখ থেকে মোহামেডান অধিনায়ক ও মালি ফরোয়ার্ড সুলমান দিয়াবাতে টোকা দেওয়ার আগ মুহূর্তে তাকে পেছন থেকে ফাউল করেন দানিলো। রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। বলের লাইনে ঝাঁপিয়েও মোজাফ্ফরভের জোরাল স্পট কিক আটকাতে পারেননি তুষার (২-১)।
যোগ করা সময়ে (৯০+৪ মিনিটে) বাম দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা সানডে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জায়গা বানিয়ে কাছের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন। নিশ্চিত হয়ে যায় চলতি লিগে মোহামেডানের ১১তম জয়।
এদিকে সাত হারের পর জিতেছে ওয়ান্ডারার্স। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেন ইউসুফ সিফাত। অবশ্য এই জয়ের পরও লিগ টেবিলে ওয়ান্ডারার্স থাকল অবনমন অঞ্চলেই। ১৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে দশ দলের মধ্যে তারা আছে নবম স্থানে। সমান ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানে আছে ফর্টিস।
এদিকে নিজেদের মাঠে আবাহনীকে স্বচ্ছন্দেই হারিয়েছে কিংস। কদিন আগে ময়মনসিংহে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীকে টাইব্্েরকারে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ১০ জনের কিংস। সেই শোকেই হোক, কিংবা অন্য কারণেই হোকÑ শুক্রবার প্রতিপক্ষের মাঠে স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারেনি ১৭ বারের লিগ চ্যাম্পিয়ন এবং ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’ খ্যাত আবাহনী। কিংস অ্যারেনায় স্বাগতিকদের জয়ের নায়ক ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। জোড়া গোল করেন এই ফরোয়ার্ড।

ম্যাচের ইনজুরি সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে হাতাহাতিতে জড়ান দুই দলের খেলোয়াড়রা। তাতে রেফারি ৩ জনকে লালকার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন। কিংসের সাদ উদ্দিন, সিনিয়র সোহেল রানা ও আবাহনীর শাহিন লাল কার্ড দেখেন।
১৬ মিনিটে রাকিবের কাছ থেকে ফিরতি পাস ধরে নিখুঁত শটে জাল খুঁজে নেন কিংসের ফাহিম (১-০)। ৪৯ মিনিটে ব্যবধান করে কিংস। রাকিবের পাস ধরে দারুণ কোনাকুনি শটে জাল খুঁজে নেন ফাহিম (২-০)। গোলরক্ষক মিতুল মারমা ঝাঁপিয়ে বলের নাগাল পাননি। 
১৩ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে আবাহনী। আর সমান ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কিংস।

×