
করাচিতে অনুশীলনে পাকিস্তান ক্রিকেট দল
কে বলবে আট জাতির একটি টুর্নামেন্ট। মনে হচ্ছে বিশ্বকাপ! প্রায় তিন দশক পর বৈষয়িক ইভেন্ট ফেরার আনন্দে উদ্বেল পাকিস্তান। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডিজুড়ে সাজ সাজ রব। পাকিস্তানে সর্বশেষ আইসিসির আসর বসেছিলে ১৯৯৬ সালে। ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েছিল তারা।
২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কান টিম বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে একঘরে হয়ে পড়ে দেশটি। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বড় দেশগুলো নিয়ে সফল দিপক্ষীয় সিরিজ, ঘরোয়া পিএসএল এবং এশিয়া কাপের পর অবশেষে আইসিসির ইভেন্ট আয়োজনের সুযোগ পেল ক্রিকেটপাগল দেশটি। যদিও চিরশত্রু ভারত তাদের ম্যাচগুলো খেলবে দুবাইয়ে। করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে আলোচিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর্দা উঠছে আজ। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় বিকাল তিনটায়।
১৯৯৮ সালে প্রবর্তিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসর এটি। ওয়ানডেতে সেরা আট দলের শ্রেষ্ঠত্বের আসরে এ- গ্রুপে ভারত, পাকিস্তানের সঙ্গী বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। দুবাইয়ে বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মাঠে নামবে টাইগাররা। বিÑ গ্রুপে আছে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান।
অনেক আকাক্সক্ষার আয়োজন সফল করতে মরিয়া পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ও দেশটির প্রশাসন। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম প্রায় পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। ব্যাপক সংস্কার হয়েছে করাচি আর পিন্ডিতেও। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করতে এসে খোদ প্রধানমন্ত্রি শাহবাজ শরীফ বলেছেন, সেরা আয়োজনের চ্যালেঞ্জ নিতে পুরোপুরি প্রস্তুত তার দেশ।
মাঠের লড়াইয়ে অবশ্য সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না পাকিস্তানের। এই সপ্তাহেই ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের ফাইনালে এই নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল। বড় তারকা বাবর আজমের ব্যাটে রান নেই। সাউদ শাকিল, আগা সালমান, তৈয়ব তাহিররা এখনো আন্তর্জাতিক পারফর্মার হয়ে উঠতে পারেননি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৫২ রান তাড়া করে জয়ের পরই ২৪২ রানে অলআউট পাকিরা কতটা ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ সেটিই প্রমাণ করে। বোলিংয়ে বড় নাম দুই পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহ।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ঠিক আগে মিচেল স্যান্টনারের নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতেছে পাকিস্তানের মাটিতে। ডেভন কনওয়ে, কেন উইলিয়ামসন, রাচিন রবিন্দ্র, ড্যারিল মিচেল, গ্লেন ফিলিপসদের নিয়ে চমৎকার ব্যাটিং লাইন-আপ, সঙ্গে ম্যাট হেনরি উইল ও রুর্কিদের নিয়ে গড়া কার্যকর পেস বোলিং। স্পিনে মিচেল স্যান্টনার, মাইকেল ব্রেসওয়েলদের পাশাপাশি ফিলিপস, রাচিনরাও হাত ঘোরাবেন।
চমৎকার ভারসাম্যপূর্ণ একটা দল। দুর্ভাগ্য ইনজুরির কারণে শেষ মুহূর্তে ছিটকে গেছেন তারকা পেসার লকি ফার্গুসন। ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড ও সর্বশেষ ২০১৭ আসরের শিরোপাধারী দুই দলই জয় দিয়ে মিশন শুরু করতে চায়।
১৯৭৩ থেকে ওয়ানডেতে ১১৮ দেখায় ৬১ জয়ে পরিসংখ্যানে কিছুটা এগিয়ে পাকিস্তান। নিউজিল্যান্ডের জয় ৫৩ ম্যাচে। টাই ১ ও পরিত্যক্ত ৩।