মঙ্গলবার মিরপুরে অনুশীলনে মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে লিটন কুমার দাস (ডানে)
পাকিস্তানের বিপক্ষে দারুণ এক সিরিজ শেষ করে ফিরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে খুব বেশি সময় পাচ্ছেন না ক্রিকেটাররা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত হতে। সেজন্যই পাকিস্তান সিরিজকে এখন অতীত মনে করছেন লিটন কুমার দাস। এবার ভারত সফরে কঠিনতর চ্যালেঞ্জ। অবশ্য ভারতকে তুলনামূলকভাবে নিজেদের কন্ডিশনে ভালো দলই মনে করছেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
তবে বাংলাদেশ কিংবা ভারত দুই দলেরই ব্যাটিং গভীরতা ভালো বলেই মনে করণে লিটন। টেস্ট ক্রিকেটে বেশ ভালো ফর্মে আছেন এ ডানহাতি এবং ৭ নম্বর পজিশনে বেশ দ্রুতগতিতেই ব্যাট চালাতে পারঙ্গম। বিষয়টাকে সহজভাবেই দেখছেন তিনি এবং মনে করছেন এখুনি দায়িত্ব নিয়ে ভালো ব্যাট করার সময়।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই পজিশনেই উভয় টেস্টে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন লিটন। কিন্তু মেহেদি হাসান মিরাজকে নিজের থেকেও ভালো ব্যাটার হিসেবে দাবি করেছেন তিনি। মঙ্গলবার মিরপুরে অনুশীলন শেষে এসব কথা বলেন লিটন। ভারত সফরে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে দুই টেস্টের সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। ১৯ সেপ্টেম্বর সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু। পাকিস্তানের চেয়ে তুলনামূলকভাবে কঠিন প্রতিপক্ষ ভারত।
বিশেষ করে নিজেদের কন্ডিশনে। কারণ বিশে^র যে কোনো দলই ভারতে এসে টেস্ট খেলতে নেমে সংগ্রাম করে। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে ফেরার পর আসন্ন সিরিজ নিয়ে লিটন বলেছেন, ‘দেখেন আমরা পাকিস্তানে খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমার কাছে মনে হয় এটা অতীত হয়ে গেছে। এখান থেকে আত্মবিশ^াস পেয়েছি, যখন ঘরের মাটিতে ভারতের সঙ্গে খেলব তখন ভারত সবসময় শক্তিশালী দল।
আমি বলব না যে খুব চ্যালেঞ্জিং হবে, আবার সহজ হবে। তারা খুব ভালো দল তাদের কন্ডিশনে। টেস্ট ক্রিকেটে যদি তাদের অবস্থানটা দেখেন অনেক উপরে।’
ভারতীয় দলে বিশে^র অন্যতম সেরা দুই ব্যাটার রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি রয়েছেন। এ ছাড়া বর্তমান সময়ের তারকা শুভমান গিল, ঋষভ পান্ত, লোকেশ রাহুলদের সঙ্গে শেষদিকে ব্যাট চালাতে সক্ষম রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশি^নরাও আছেন যারা দুজন এই মুহূর্তে বিশে^র সেরা দুই টেস্ট অলরাউন্ডার। এ বিষয়ে লিটন বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয় দুই দলের ব্যাটিং গভীরতাই খুব ভালো। দুই দল যখন খেলবে সাত-আটটা করে মূল ব্যাটসম্যান থাকবে।’
ওয়ানডে ও টি২০ ফরম্যাটে দীর্ঘ সময় রান খরায় ভুগলেও টেস্ট ক্রিকেটে লিটনকে অন্য চেহারায় এবং ভিন্ন দায়িত্বে দেখা যায়। স্বল্প পরিসরে ওপেনার হলেও টেস্টে ব্যাট করেন সাত নম্বরে। অধিকাংশ সময়ই তিনি দ্রুতগতিতে রান করেন। এ বিষয়ে লিটন বলেছেন, ‘আমি যে খুব আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছি তা না। আমার কাছে যে বলগুলো মনে হয়েছে স্কোরিং, সেগুলোতে স্কোর চেষ্টা করেছি। আমি যে জায়গায় ব্যাট করি, সবাই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে। আমি প্রায় ৯-১০ বছর ক্রিকেট খেলছি।
তাই ওইটুকু অভিজ্ঞতা তো হয়েছে দায়িত্ব নেওয়ার, তো এখন না আর কবে সুযোগ পেলে। আমি বলছি যে দায়িত্ব নেওয়ার সময় এসেছে।’ কিন্তু বাংলাদেশের কি ভারতের মতো এত পরিমাণে ভালো ব্যাটার আছে যারা বড় কিছু দিতে পারে? এ বিষয়ে লিটন বলেছেন, ‘ব্যাটসম্যান নেই এটা ভুল কথা। আমার থেকেও ভালো ব্যাটসম্যান নিচে রয়েছে- মিরাজ। আমার কাছে মনে হয় টেস্ট ক্রিকেট এমন একটা খেলা আপনার হাতে অনেক সময় আছে।
আপনি শূন্য থেকে শুরু করে আপনার সারাদিন সময় আছে উন্নতি করার।’ কোকাবুরা বলে অভ্যস্ত বাংলাদেশকে এবার খেলতে হবে এসজি বলে। বলের গতি-প্রকৃতি, সুইং ও আচরণে যথেষ্ট ভিন্নতা বাড়তি চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারে। এ বিষয়ে লিটন বলেছেন, ‘আপনারা জানেন ভারত বড় একটা দল, আর এই বলে আমরা খুব কমই খেলি। আমাদের প্লেয়াররা খুবই পরিশ্রম করছে দেখা যাক কি হয়।
প্রস্তুতি বলতে আমাদের সেরা বোলারদের বলই আমরা খেলছি। কিছুটা কঠিন তো আছেই। আপনি যদি দেখেন কোকাবুরার নতুন বল খেলা কঠিন, তবে পুরাতন বল খেলা সহজ। আর এসজি বলে নতুন বল খেলা সহজ বলেও পুরাতন বল কিন্তু খেলা কঠিন। আমরা যত মানিয়ে নিতে পারব, ততই আমাদের জন্য ভালো।’