ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

দুর্ভাগা লাইলস, টেবোগোর সোনার হাসি

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০১:২৯, ১০ আগস্ট ২০২৪

দুর্ভাগা লাইলস, টেবোগোর সোনার হাসি

প্যারিস অলিম্পিকে ২০০ মিটারে সবাইকে পেছনে ফেলে স্বর্ণপদক জয়ের নজির গড়েন বতসোয়ানার লেটসিলে টেবোগো। এই ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছেন ফেভারিট নোয়া লাইলস

কত স্বপ্ন, ১০০ মিটারে স্বর্ণ জিতেছেন, সামনে ২০০ মিটার ‘ডাবল’, এরপর ৪ গুণিতক ১০০ মিটার জিতে অনন্য ‘ট্রেবল’-এর হাতছানি...। দুর্ভাগ্য নোয়াহ লাইলসের। করোনা পজিটিভ ২৭ বছর বয়সী মার্কিন সেনেসশন স্প্রিন্টারকে ২০০ মিটারে ব্রোঞ্জ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো। এই ইভেন্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সময় নিলেন ১৯.৭০ সেকেন্ড। দৌড় শেষে ট্র্যাক ছাড়লেন হুইল চেয়ারে করে। একইসঙ্গে ৪ গুণিতক ১০০ মিটার থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিলেন লাইলস। ১০০ মিটারে লাইলসের সঙ্গে পারেননি, প্যারিস অলিম্পিকে পুরুষদের ২০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জিতলেন বোতসোয়ানার লেটসিলে টেবোগো। জীবনের প্রথম অলিম্পক স্বর্ণে মাতলেন বুনো উল্লাসে। ১৯.৬২ সেকেন্ড সময় নিয়ে রৌপ্য জিতেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কেনেথ বেডনারেক। ‘২০২৪ অলিম্পিকে আমার যাত্রা এখানেই শেষ। যেমন স্বপ্ন দেখেছিলাম, এটা তেমন ছিল না।’ এক্সে লিখেছেন লাইলস।
সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লাইলস বলেন, ‘ভোর পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠেছি। খুব খারাপ লাগছিল। বুঝতে পারছিলাম এটা ১০০ মিটারে দৌড়ানোর ফল নয়। চিকিৎসকদের ঘুম থেকে তুলে পরীক্ষা করানোর পর দুর্ভাগ্যজনকভাবে জানা যায় আমি কোভিড পজিটিভ।’ লাইলস পরে সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন, ‘অসুস্থতা অবশ্যই আমার পারফর্ম্যান্সকে প্রভাবিত করেছে। তবে সত্যি বলতে কোভিড নিয়েও ব্রোঞ্জ জেতায় নিজেকে নিয়ে আমি আরও বেশি গর্বিত।’ ১০০ মিটারে আট প্রতিযোগীর মধ্যে ষষ্ঠ হওয়া টেবোগো ২০০ মিটারে পেছনে ফেললেন সবাইকে। প্রথমবারের মতো অলিম্পিকসে স্বর্ণ জয়ের অনির্বচনীয় স্বাদ পেয়েছেন বতসোয়ানার এই ২১ বছর বয়সী অ্যাথলেট। এর আগে তিনি অ্যাথলেটিকসের বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নশিপে ২০০ মিটারে পেয়েছিলেন স্বর্ণ। তবে অলিম্পিকসে সোনার হাসি এই প্রথম। এই ইভেন্টে বিশ্ব রেকর্ড ও অলিম্পিকে রেকর্ড দুটিই জ্যামাইকান কিংবদন্তি উসাইন বোল্টের। ২০০৯ সালে বার্লিনে ১৯.১৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। তার এক বছর আগে বেইজিংয়ের ১৯.৩০ সেকেন্ড টাইমিং করে গড়েছিলেন অলিম্পিকসের রেকর্ড। লাইলসের হতাশা আর টেবোগের সাফল্যের এ যাত্রায়ও অক্ষত থাকল দুটিই। রেসের শেষ দিকে টেবোগোর বুক চাপড়ানোর দৃশ্য কিংবদন্তি বোল্টকে মনে করিয়ে দেয়।

অবশ্য বোল্টকে আদর্শ মেনেই ট্র্যাকে পা রাখেন টেবোগো। দুই মাস আগে মাকে হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে উঠে অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা তার কাছে এখনো বাস্তব মনে হচ্ছে না। অলিম্পিকে বোতসোয়ানোর এটা প্রথম স্বর্ণ। এর আগে ২০১২তে পুরুষদের ৮০০ মিটার দৌড়ে রুপা আর ২০২০ অলিম্পিকে পুরুষদের ৪ গুণিতক ৪০০ মিটারে ব্রোঞ্জ জিতেছিল আফ্রিকান দেশটি। মা মারা যাওয়ার পর এক মাস অনুশীলন বন্ধ রেখেছিলেন টেবোগো, ‘ট্র্যাকে প্রতিটি পদক্ষেপে আমি মাকে স্মরণ করেছি। আফ্রিকান মহাদেশের জন্যই এই অজর্ন অর্থবহ। কারণ সবাই এই অঞ্চলকে স্প্রিন্টের ঘর হিসেবে দেখে।’ বলছিলেন টেবোগো। কোভিড-পজিটিভ হয়ে ব্রোঞ্জ জেতায় লাইলসেরও প্রশংসা করেন তিনি।

×