মিনহাজুল করিম স্বাধীন
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার একটি ক্লাবে অনুশীলনের আমন্ত্রণ পেয়েছে যশোর শামস-উল-হুদা একাডেমির তরুণ ফুটবলার মিনহাজুল করিম স্বাধীন। আর্জেন্টিনা ফুটবলের তৃতীয় বিভাগের দল এথলেটিকো ভিলা স্যান কার্লোস ক্লাবে এক মাসের অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছেন স্বাধীন। অনেকের মতে স্বাধীনের আর্জেন্টিনা যাত্রায় নতুন করে ফুটবলে স্বপ্ন দেখাবে এ দেশের তরুণদের।
বাংলাদেশের পেশাদার ফুটবল লিগের দল শেখ জামাল ধানমণ্ডির ট্রেনার অ্যারিয়েল কোলম্যানের মাধ্যমে স্যান কার্লোস পেয়েছে স্বাধীনের খোঁজ। আর্জেন্টাইন ট্রেনার কোলম্যান মার্চে শামস উল হুদা একাডেমি পরিদর্শনে এসেছিলেন। উপভোগ করেন অনুশীলন ম্যাচ। এ সময় কোলম্যানের নজর কাড়েন স্বাধীন। এরপর তরুণ স্বাধীনের খেলার ভিডিও পাঠানো হয় আর্জেন্টিনার ওই ক্লাবে। তাতেই ভাগ্য খুলেছে তরুণ এ ফুটবলারের। এসেছে প্রয়াত কিংবদন্তি ম্যারাডোনার দেশের ক্লাব থেকে ডাক।
শামস-উল-হুদা একাডেমি সূত্রে জানানো হয়েছে, স্বাধীনকে স্যান কার্লোস ক্লাবের সাঙ্গে অনুশীলনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পত্রাকারে দেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে স্বাধীনকে যোগ দিতে হবে আর্জেন্টাইন ক্লাবে। আর্জেন্টিনা থেকে আমন্ত্রণ পাওয়া স্বাধীন বয়সভিত্তিক ফুটবলের পরিচিত মুখ। খেলেছেন ২০২২ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের যুব দল নিয়ে অনুষ্ঠিত বাফুফে অনূর্ধ্ব-১৮ লিগে চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাবের হয়ে। আগামী মৌসুমে শেখ জামালের মূল দলে নিবন্ধন হওয়ার কথা স্বাধীনের।
তিনি বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের হয়ে খেলেছেন ২০২১ সালে। যশোরের পালবাড়ি এলাকার সন্তান স্বাধীন ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৪ সুপার ‘মখ’ কাপে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন। ছিলেন ২০১৭ সালের নেপালের মাটিতে আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ দলের সদস্য। বাংলাদেশের জার্সিতে খেলেছেন ২০১৮ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ আসরে। আর্জেন্টিনার ক্লাব থেকে ডাক পাওয়া স্বাধীন স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত।
‘আমার কাছে পুরো বিষয়টা স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে, অভিমত স্বাধীনের। আমি ছোটবেলা থেকেই আর্জেন্টিনার ভক্ত। সেই আর্জেন্টিনায় আমি ফুটবল অনুশীলন করতে যাব, এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে? স্বাধীনের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট ফজলুল করিম নিজেও ফুটবল খেলেছেন সেনাবাহিনী দলের হয়ে। বাবার উৎসাহে বড় ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে স্বাধীন। সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শামস উল হুদা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা নাসের শাহেরিয়ার জাহেদি, কর্মকর্তা আর কোচ কাজী মারুফের প্রতি।
২০১১ সালে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে যাত্রা শুরু করে যশোরের শামস উল হুদা ফুটবল একাডেমি। মাত্র এক যুগ সময়ের মধ্যে এই একাডেমি এখন দেশের ফুটবলের আলোক-বর্তিকা। একাডেমিতে রয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে থাকা, খাওয়া এবং চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা। খেলাধুলা, পড়াশুনার পাশাপাশি তাদের মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধেরও শিক্ষা দেয়া হয়। আর ফুটবলার হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার দৃঢ় স্বপ্ন নিয়ে নিজেদের গড়ে তুলছেন ফুটবলাররা।
