ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ডেনমার্ককে হারিয়ে শেষ ষোলোতে অস্ট্রেলিয়া

ফ্রান্সকে হারিয়ে অঘটন তিউনিসিয়ার

রুমেল খান

প্রকাশিত: ০০:২৫, ১ ডিসেম্বর ২০২২

ফ্রান্সকে হারিয়ে অঘটন তিউনিসিয়ার

ফ্রান্সের বিরুদ্ধে তিউনিসিয়ার গোলদাতা ওয়াহবির সঙ্গে সিমানের উল্লাস

২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে চলমান কাতার বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটন ঘটিয়েছে তিউনিসিয়া। বুধবার আল রাইয়ানের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ডি-গ্রুপের এই ম্যাচে ফ্রান্সকে হারিয়ে অবশ্য লাভ হয়নি তিউনিসিয়ার, গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে তাদের। আগেই গ্রুপসেরা হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যাওয়া ফ্রান্সই শেষ পর্যন্ত এই গ্রুপের সেরা হয়েছে।

তাদের পর গ্রুপ রানার্সআপ হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আল ওয়াকরার আল জানোব স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত অপর ম্যাচে তারা ১-০ গোলে হারায় ডেনমার্ককে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ফ্রান্স গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন, সমান পয়েন্ট নিয়ে গোলগড়ে পিছিয়ে থেকে অস্ট্রেলিয়া গ্রুপ রানার্সআপ, ৪ পয়েন্ট পয়েন্ট তিউনিসিয়া তৃতীয় ও ১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ হয়েছে ডেনমার্ক।
আগেই শেষ ১৬ তে খেলা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল দু’বারের চ্যাম্পিয়ন, ৪নং র‌্যাঙ্কিংধারী ফ্রান্সের। এজন্য বুধবারের ম্যাচের আগে নির্ভারই ছিল তারা। ফলে দ্বিতীয় সারির দল মাঠে নামানোর বিলাসিতা দেখান ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম। এর খেসারতও দেন! একাদশে রাখেননি তারকা ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে, অ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান, অলিভিয়ের জিরুদ ওসমান ডেম্বেলে, প্রথম গোলরক্ষক হুগো লোরিসসহ আরও অনেককেই।
গুগো লোরিসের স্থলে খেলতে নেমে গোলরক্ষক স্টিভ মানদানদো বিশ্বকাপে ফ্রান্সের হয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সী (৩৭ বছর ২৪৭ দিন) খেলোয়াড়ের রেকর্ডের অধিকারী হন।
তারকা সমৃদ্ধ ফরোয়ার্ডরা না থাকায় ফলে ফরাসি আক্রমণভাগ কিছুটা দুর্বলই ছিল। আর এটা দেখে তিউনিসিয়া দল পুলকিতই হয়েছিল। ৩-৪-২-১ ফর্মেশনে শুরু থেকেই খেলতে থাকে তারা। রক্ষণ সামলে সুযোগ পেলেই প্রতি আক্রমণ। ৮ মিনিটেই ৪-৩-৩  ফর্মেশনে খেলতে থাকা ফ্রান্সের জালে বল জড়ায় তারা। কিন্তু ওয়াহাবি খাজরির গোলটি অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়! হতাশায় পর্যবসিত হয় তিউনিসিয়া শিবির।
তবে বিরতির পর ৫৮ মিনিটে ঠিকই গোল করে উল্লাসে মাতে ৩০ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী এবং ‘ঈগলস অব কার্থেজ’ খ্যাত তিউনিসিয়া। এই আসরে প্রথমবারের মতো কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায় তারা। মাঝমাঠে এক ফরাসি খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন মিডফিল্ডার আইসা লেইদুনি। বল দেন সতীর্থ খাজরি। অসাধারণ দক্ষতায় তিন ফরাসি ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দ্রুতই প্রতিপক্ষের বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন খাজরি। এদিকে বিপদ বুঝে সামনে এগিয়ে আসেন ফ্রান্স গোলরক্ষক মানদানদো। কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি। তার পাশ দিয়েই বা পায়ের ধীরগতির অথচ দৃষ্টিনন্দন গড়ানো প্লেসিং শটে জালে পাঠান খাজরি (১-০)।
গোল হজমের পর টনক নড়ে ফ্রান্সের। কোচ দেশম মাঠে নামান এমবাপে, গ্রিজম্যান, ডেম্বেলেসহ ৫ ফুটবলারকে। একের পর এক আক্রমণ করেও শেষ পর্যন্ত হার এড়াতে পারেনি ফ্রান্স। যদিও ম্যাচের প্রায় শেষদিকে (৯০+৮ মিনিটে) বক্সের ভেতরে ভলিশটে গোল করেন গ্রিজম্যান। কিন্তু রিপ্লে দেখে অফসাইডের কারণে গোল বাতিল করেন রেফারি। আর নিজেদের ইতিহাসের সেরা জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তিউসিনিয়া। যদিও দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া হয়নি তাদের। কিন্তু তাতে তাদের চিত্তসুখের কোন কমতি হয়নি!
ড্র করলেই দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলা নিশ্চিত ছিল। কিন্তু ম্যাচে ডেনমার্ককে হারিয়েই দেয় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের ৬০ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন ফরোয়ার্ড ম্যাথু লেকি। এই জয়ের ফলে সকারুসরা ২০০৬ আসরের পর আবারও নকআউট পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল।

সম্পর্কিত বিষয়:

×