
ছবি: প্রতীকী
বর্তমান ডিজিটাল যুগে স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। তবে প্রযুক্তির এই সুবিধা যেমন আমাদের দৈনন্দিন কাজকে সহজ করে তুলছে, তেমনি এর মাধ্যমে বেড়েছে সাইবার হামলার ঝুঁকিও।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোনে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করতে হ্যাকাররা প্রতিনিয়ত চালাচ্ছে নানা ধরনের সাইবার হামলা। সম্প্রতি ম্যালওয়্যার ও স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে এসব আক্রমণের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। তবে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে স্মার্টফোনকে অনেকটা নিরাপদ রাখা সম্ভব। চলুন দেখে নেওয়া যাক, কী কী করণীয়—
১. সপ্তাহে অন্তত একবার ফোন রিস্টার্ট করুন
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, সপ্তাহে অন্তত একবার স্মার্টফোন বন্ধ করে কিছুক্ষণ পর চালু করতে। এটি ‘জিরো-ক্লিক এক্সপ্লয়েট’ ধরনের সাইবার আক্রমণ ঠেকাতে সহায়তা করে। এই ধরনের এক্সপ্লয়েটে ব্যবহারকারী কিছু না করলেও দূর থেকে হ্যাকাররা ফোনে প্রবেশ করতে পারে। তাই সপ্তাহে একবার ফোন বন্ধ করে ১০ সেকেন্ড অপেক্ষা করে পুনরায় চালু করা উচিত। পাশাপাশি নিয়মিত অপারেটিং সিস্টেম ও অ্যাপ হালনাগাদ করাও জরুরি।
২. অপ্রয়োজনীয় ব্লুটুথ সংযোগ বন্ধ রাখুন
ব্লুটুথ অন থাকা অবস্থায় স্মার্টফোন সহজে হ্যাকারদের নিশানা হতে পারে। বিশেষ করে জনবহুল এলাকায় এই ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই প্রয়োজন না থাকলে ব্লুটুথ বন্ধ রাখার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। নিরাপত্তা বাড়াতে ফোনের ব্লুটুথের নাম পরিবর্তন করে সাধারণ কিছু রাখা যেতে পারে, যেমন ‘Device 123’। এতে শনাক্ত করাও কঠিন হবে এবং ব্যাটারির স্থায়িত্বও বাড়বে।
৩. পাবলিক ইউএসবি চার্জিং পোর্ট এড়িয়ে চলুন
বিমানবন্দর, ক্যাফে কিংবা হোটেলে থাকা পাবলিক ইউএসবি চার্জিং পোর্ট ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (NSA) জানিয়েছে, এসব পোর্ট থেকে ‘জুস জ্যাকিং’ নামক এক ধরনের সাইবার হামলার মাধ্যমে হ্যাকাররা ফোনে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করাতে পারে অথবা তথ্য চুরি করতে পারে। তাই সবসময় নিজের চার্জার বা পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করাই নিরাপদ।
৪. পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারে সতর্কতা
‘ফ্রি ওয়াই-ফাই’ নামের নানা ভুয়া নেটওয়ার্কের ফাঁদে পড়ে অনেকেই অজান্তেই হ্যাকারদের হাতে তথ্য তুলে দেন। উন্মুক্ত ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক সাধারণত সুরক্ষিত থাকে না, ফলে সহজেই ডেটা হ্যাক হতে পারে। তাই কোনো পাবলিক নেটওয়ার্কে সংযোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট স্থান থেকে আসল নেটওয়ার্কের নাম নিশ্চিত হওয়া জরুরি। আরও নিরাপদ থাকতে ব্যবহার করা যেতে পারে ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN)।
৫. ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন নিরাপদে রাখুন
‘হট-মাইকিং’ নামক পদ্ধতিতে হ্যাকাররা স্মার্টফোনের মাইক্রোফোন চালু করে গোপনে ব্যবহারকারীর কথোপকথন শুনে ফেলতে পারে। এ জন্য প্রয়োজন পড়ে ক্ষতিকর অ্যাপ বা ম্যালওয়্যার। তাই ফোনের প্রতিটি অ্যাপের পারমিশন নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করা উচিত। আর বাড়তি সুরক্ষার জন্য ক্যামেরা কভার ও মাইক্রোফোন ব্লকার ব্যবহার করা যেতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল।
রাকিব