
ছবি: সংগৃহীত
বিড়ালের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে প্রয়োজন নেই দামি খেলনা বা মুখরোচক খাবারের। শুধু মুখের একটি অভিব্যক্তিই যথেষ্ট—চোখ সামান্য সংকুচিত করে ধীরে পলক ফেলা। সম্প্রতি Scientific Reports নামের এক আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় উঠে এসেছে, এই সাধারণ চোখের ভঙ্গিমাই বিড়ালের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক মজবুত করতে পারে।
ইউনিভার্সিটি অফ সাসেক্স ও ইউনিভার্সিটি অফ পোর্টসমাউথ-এর গবেষকদের যৌথ প্রচেষ্টায় চালানো এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন প্রাণীবিজ্ঞানী ড. টাসমিন হামফ্রি ও অধ্যাপক ক্যারেন ম্যাককম্ব। গবেষণায় অংশ নেন মনোবিজ্ঞানী ড. লিয়েন প্রুপস-ও।
দুটি পর্যায়ে সম্পন্ন এই গবেষণার প্রথম ধাপে বিড়ালের মালিকরা তাদের পোষ্যদের দিকে তাকিয়ে ধীরে পলক ফেলেন। দেখা যায়, মালিক যখন ধীরে পলক ফেলেন, তখন বিড়ালরাও একই ভঙ্গিমায় সাড়া দেয়। দ্বিতীয় ধাপে, এক অচেনা গবেষক বিড়ালের দিকে ধীরে পলক ফেলে হাত বাড়ান। দেখা যায়, বিড়ালরা বেশি আগ্রহ নিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসে, তুলনায় যখন মুখে কোনো ভাব প্রকাশ করা হয়নি।
অধ্যাপক ম্যাককম্ব বলেন, এই ধরণের চোখের সংকেত অনেকটা মানুষের আসল হাসির মতো। বহু বিড়ালপ্রেমী আগে থেকেই ধারণা করতেন, বিড়ালের সঙ্গে চোখের মাধ্যমে বোঝাপড়া সম্ভব—এবার আমরা তার বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পেলাম।
গবেষণায় বলা হয়, বিড়ালদের এই ‘স্লো ব্লিঙ্ক’ আচরণ হয়তো মানুষকে শান্ত বার্তা দেওয়ার উপায় হিসেবে গড়ে উঠেছে। হয়তো একসময় এটি ছিল হুমকির চাহনি এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল, যা এখন বন্ধুত্বের ভাষায় রূপান্তরিত হয়েছে।
গবেষক ড. হামফ্রি বলেন, মানুষ ও বিড়ালের মধ্যকার ইতিবাচক যোগাযোগ শুধু ঘরের ভেতর নয়—আশ্রয়কেন্দ্র, পশু চিকিৎসালয় বা বাহ্যিক পরিবেশেও বিড়ালের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিড়ালের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে চাইলেই আপনি এই কৌশলটি ব্যবহার করতে পারেন। শান্তভাবে চোখ সংকুচিত করে ধীরে একটি পলক ফেলুন—দেখবেন বিড়ালও একইভাবে জবাব দিচ্ছে। শুরু হয়ে যাবে এক নিরব বোঝাপড়ার বন্ধন।
পরের বার যখন কোনো বিড়ালের চোখে চোখ রাখবেন, দৃষ্টি আক্রমণাত্মক না করে হালকাভাবে ধীরে পলক ফেলুন। সে হয়তো আপনাকে তার বন্ধু বলে মেনে নেবে।
চলুন, চোখের ভাষাতেই বলি—তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে এসেছি।
এসএফ