ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

রাতের আঁধারে মাদরাসা ও এতিমখানার সামনের জমি দখল করে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ 

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৮:২৭, ১০ মে ২০২৫; আপডেট: ১৮:২৭, ১০ মে ২০২৫

রাতের আঁধারে মাদরাসা ও এতিমখানার সামনের জমি দখল করে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ 

ছবি: সংগৃহীত

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা পুলিশের নির্দেশ উপেক্ষা করে শুক্রবার (৯ মে) দিবাগত মধ্যরাতে নির্মিতব্য মডেল মাদরাসা ও এতিমখানার সামনের জমি দখল করে জোরপূর্বক পূর্ণাঙ্গ ঘর নির্মাণ করেছেন কতিপয় প্রভাবশালীরা। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ বিল্লগ্রাম এলাকার।

আজ শনিবার দুপুরে ওই গ্রামের শিক্ষানুরাগী ও ব্যবসায়ী এসএম সানাউল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, সমাজের মুসুল্লীদের জন্য নিজ উদ্যোগে দীর্ঘদিন পূর্বে ওই এলাকায় বায়তুল জান্নাত নামের পাকা জামে মসজিদ নির্মান করা হয়। এরপর এলাকার দারিদ্র ও অসহায় পরিবারের শিশুদের মাঝে ইসলামের দ্রুতি ছড়িয়ে দিতে মসজিদের পাশে মডেল মাদরাসা ও এতিখানার কাজ শুরু করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, মসজিদ ও মাদরাসা ০.৯২ শতক জমির ওপর। যার এসএ ও আরএস রের্কডীয় মালিক তার (সানাউল্লাহ) দাদী মরহুমা সাজু বিবি। কিন্তু স্থানীয় সিদ্দিক মৃধার পিতামহ গংরা অত্যন্ত সু-কৌশলে প্রতারনার মাধ্যমে তাদের নামে ওই সম্পত্তির কিছু অংশ বিএস রেকর্ড করে নেয়।

যেকারণে মাদরাসা ও এতিমখানা নির্মাণ শুরুর সময় স্থানীয় সিদ্দিক মৃধা নির্মিতব্য মাদরাসার সামনের একাংশের জমি নিজের দাবি করে বাঁধা প্রদান করেন। ওইসময় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম্য আদালতে অভিযোগ করা হয়।

পরবর্তীতে সালিশ বৈঠকে স্থানীয় জণসাধারন ও ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে সিদ্দিক মৃধার অভিযোগ ভিত্তিহীন হিসেবে প্রমানিত হয়। এরপর সিদ্দিক মৃধা গংরা আদালতে মামলা দায়ের করলেও উপযুক্ত দলিলাদি উপস্থাপন করতে না পারায় আদালতের বিচারক তাদের মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন।

বর্তমানে ওই জমির রেকর্ড হালনাগাদে প্রকৃত মালিকানা সংশোধনের জন্য দেওয়ানী মোকদ্দমা নং-২৫৩/২০২১ মোকাম বরিশাল গৌরনদী সহকারী জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছেন।

সানাউল্লাহ আরও অভিযোগ করেন, গত ২২ এপ্রিল সিদ্দিক মৃধা এলাকার কতিপয় ব্যক্তির সহায়তায় নির্মিতব্য মাদরাসা ও এতিমখানার সামনে একটি অস্থায়ী ঘর নির্মান করতে যায়। এসময় তাকে বাঁধা প্রদান করায় তার (সানাউল্লাহ) বাবা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হাজী আব্দুল মান্নান সরদারকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতিসহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করা হয়।

এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসি’র মধ্যস্থতায় বিষয়টি নিয়ে সমাধানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কোনধরনের স্থাপনা নির্মান না করতে প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা উভয়পক্ষকে মৌখিক নির্দেশ প্রদান করেন।

সানাউল্লাহর অভিযোগ, প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে শুক্রবার (৯ মে) দিবাগত রাতে সিদ্দিক মৃধা তার ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে পূর্বে (২২ এপ্রিল) নির্মিত অস্থায়ী ঘরের ছাউনিসহ অন্যান্য কাজ করেন। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

গৌরনদী মডেল থানার এসআই মো. জুয়েল বলেন, খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই অস্থায়ী ঘরের ছাউনির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত সিদ্দিক মৃধা বলেন, আমাদের জমিতে আমরা ঘর নির্মান করেছি। আমরা কারো জমি দখল করিনি।

গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া বলেন, প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে কেউ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আরা মৌরি বলেন, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আসিফ

×