ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

বাউফলে মাদ্রাসার

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২২:৩০, ১০ মে ২০২৫

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ

কালাইয়া রাব্বানিয়া কামিল মাদ্রাসা। ইনসেট অধ্যক্ষ আবদুল হাই

বাউফলে কালাইয়া রব্বানিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এস এম আবদুল হাই'র বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ, পেশাগত অসদাচরণসহ অনিয়মের অভিযোগ এনে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মোঃ মহিবুল্লাহ।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৯ সালে অধ্যক্ষ পদে যোগদানের পর থেকে এ.এস.এম আবদুল হাই একক কর্তৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন। 

ফ্যাসিষ্ট সরকারের রাজনৈতিক ছত্রছায়া থাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি।

অভিযোগ রয়েছে, মাদ্রাসায় তার অনুগতদের মনোনয়ন দিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করেছেন। যাতে তার কর্মকান্ডে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে।কামিল মাদ্রাসা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর বিভিন্ন খাত থেকে লাখ লাখ টাকা আয় করে থাকে। তবে এসব অর্থের নেই কোন স্বচ্ছ হিসাব। ২০২২ সালের বার্ষিক পরীক্ষার শেষে পরীক্ষার ফি বাবদ মোট ৬৪২,৭৩০ টাকা আদায় হয়। ওই টাকা থেকে শিক্ষকদের বেতন স্কেলের ২০% হারে  মোট ১,১২,০৯০ টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু ভাউচারে দেখানো হয়েছে  ৬,৪২,৭৩০ টাকা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষিকা জানিয়েছেন, তার বেতন স্কেলের ২০% হারে ৩,২০০ টাকা দেয়া হলেও ভাউচারে দেখানো হয়েছে ২৩,২০০ টাকা। একই ধরনের অভিযোগ করেছেন অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষিকারা। অভিযোগ আরও রয়েছে, সরকারি বরাদ্দকৃত টিউশন ফি বছরে দুইবার আসলেও তার কোনো স্বচ্ছতা নেই। শিক্ষকরা এর কোনো অংশ পাননি এবং মাদ্রাসায় দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন নেই। তবে উন্নয় নামে শুধু অর্থ আত্মসাৎ করেছে।

এছাড়া নুরানি বিভাগের ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আয়-ব্যয়ের কোনো হিসাব নেই বলে দাবি করেছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের অভিযোগ, সহকারী শিক্ষক মুহাম্মদ আতাউল্লাহ এবং অধ্যক্ষ এ.এস.এম আবদুল হাই মিলে প্রতিষ্ঠানের এ সব অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

অভিযোগ আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন সময় নতুন বেতনক্রম, টাইম স্কেল, বি.এড স্কেল ও এমপিও শিট সংশোধনের জন্য জোর করে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হয়েছে।

এমনকি প্রাথমিক শ্রেণির বই বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও তুলেছেন অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে। ২০২৩ সালের ৫ আগস্টের পর শিক্ষকবৃন্দের এক বিশেষ সভায় অধ্যক্ষ তার ‘ভুল স্বীকার করেন। অভিযোগকারী শিক্ষক এই বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ এ.এস.এম আবদুল হাই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সব অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।”

অভিযোগের বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মাদ আরেফীন বলেন,"অভিযোগটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহসিন উদ্দীন কে দেয়া হয়েছে। তিনি এ বিষয়টি দেখবেন।"

রাজু

×