ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যান্সার প্রতিরোধে জাদু দেখাবে এআই

প্রকাশিত: ২১:২০, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

ক্যান্সার প্রতিরোধে জাদু দেখাবে এআই

চলছে এএসিআরের বার্ষিক সম্মেলন।

এআই এখন প্রদীপের সেই ‘জিনি’! চিকিৎসা ক্ষেত্রেও সে গুটিগুটি পায়ে ঢুকে পড়েছে। বর্তমানে ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞদের অন্যতম আশা-ভরসা হয়ে উঠেছে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম মেধা। সেই কথাই প্রতিধ্বনিত হলো আমেরিকার সর্ববৃহৎ ক্যানসার-বিষয়ক সংগঠন ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যানসার রিসার্চ’ (এএসিআর)-এর বার্ষিক সম্মেলনে। আমেরিকার সান দিয়েগো শহরে সম্প্রতি শেষ হয়েছে চার দিন ব্যাপী সম্মেলন। 

যোগ দিয়েছিলেন হাজার হাজার দেশি-বিদেশি মানুষ। তাদের মধ্যে কেউ চিকিৎসক, নার্স, কেউ গবেষক, কেউ নিজেই ক্যান্সার রোগী, কেউ আবার রোগীর সেবাশুশ্রূষাকারী ‘কেয়ারগিভার’। ছিলেন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির প্রতিনিধি, ক্যান্সার-সাংবাদিকেরাও। এই সম্মেলনের লক্ষ্য হলো- একযোগে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই।

প্রশান্ত মহাসাগরের ধার ঘেঁষে সান দিয়েগো শহর। সুদূর বিস্তৃত সমুদ্র সৈকত, রৌদ্রোজ্জ্বল ভূমধ্যসাগরীয় আবহাওয়া, মেক্সিকান খাবার (মেক্সিকো সীমাম্তের একেবারে কাছে এ শহর), স্পেনীয় ঔপনিবেশিক ইতিহাসের ছোঁয়া শহরের ইতিউতি। এসবের টানে সারা বছরই পর্যটকের আনাগোনা লেগে থাকে। 

বর্তমানে এই শহর আমেরিকার বায়োটেকনোলজি হাব-ও হয়ে উঠেছে। ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফর্নিয়া, সান দিয়েগো’ (ইউসিএসডি), ‘সল্ক ইনস্টিটিউট’-এর মতো একাধিক নামজাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ শহরে। এ বছর তাই এমনই এক শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছিল এএসিআর-এর সম্মেলনের জন্য।

বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসার চিকিৎসা ক্রমশ উন্নত হচ্ছে। ক্যান্সার এমন এক অসুখ, যাতে মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েও প্রিয়জনকে বাঁচাতে অক্ষম হন। ঘরকে ঘর উজাড় হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগীর মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে, ক্যান্সার নিয়েই বহু রোগী দীর্ঘদিন বেঁচে থাকছেন, তাঁদের জীবনযাপনের মান উন্নত হয়েছে। 

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের  গবেষক অরিন্দম বসু জানান, প্রজেক্ট জিনি’ নামে একটি প্রকল্প শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছে বিশ্বের ১৯টি ক্যানসার সেন্টার। এই প্রকল্পের লক্ষ্যই হল ক্যানসার সংক্রান্ত হাজার হাজার ক্লিনিক্যাল তথ্য ও জিনোমিক তথ্য এআই-এর সাহায্যে একত্রিত করা। অরিন্দম বলেন, প্রতিটি ক্যানসার রোগীর রোগ-চরিত্র ভিন্ন। এ হেন কর্কটরোগের বৈশিষ্ট্যগুলি যত বিশদে জানা সম্ভব হবে, তত ক্যান্সারকে বাগে আনা সহজ হবে।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী মাইরিয়া ক্রিসপিন। তিনি ‘মেশিন লার্নিং’-এর উপর জোর দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ক্যানসার রোগীর সম্ভাব্য চিকিৎসা সহজ করে দিতে পারে এআই-প্রযুক্তি। ‘মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটেরিং’-এর কম্পিউটেশনাল অঙ্কোলজি বিভাগের প্রধান সোহরাব শাহ বলেছেন, রোগীর দেহে ড্রাগ রেজ়িস্ট্যান্স (কোনও ওষুধ কাজ না করার কারণ) অনুমান করতে সাহায্য করবে এআই। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের বিজ্ঞানী লোরেলেই মুচি জোর দিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য এআই-এর সাহায্যে সঠিক ভাবে নথিভুক্তকরণে। কানাডার ‘প্রিন্সেস মার্গারেট ক্যানসার সেন্টার’-এর বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন হাইব-কেন্সের মতে, কার্সিনোজেনেসিস-কে বুঝতে সাহায্য করবে মেশিন লার্নিং।

 

এসআর

×