
ছবি: সংগৃহীত
ইহকাল মুমিনের জন্য যেন একটি পরীক্ষার হল। এখানে সফল হলে পরকালে রয়েছে বিশেষ পুরস্কার—জান্নাত। আর ব্যর্থ হলে রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। তবে এমন কিছু পাপ আছে, যেগুলোর শাস্তি আখিরাতেই শুধু সীমাবদ্ধ নয়—সেসব পাপের পরিণাম দুনিয়াতেই ভোগ করতে হয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সাহাবায়ে কেরামের সামনে বললেন:
“ওই ব্যক্তির নাক ধুলিমলিন হোক! ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক!” তিনি তিনবার এ কথা বললেন।
সাহাবাগণ জানতে চাইলেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ, কে সে?”
নবীজি উত্তর দিলেন:
“যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতা উভয়কে কিংবা একজনকে বার্ধক্যে পেয়েও জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ অর্জন করতে পারল না।”
এই হাদিস ইঙ্গিত করে, মা-বাবার খেদমত থেকে বঞ্চিত হওয়া এক ভয়ানক পাপ—যার শাস্তি দুনিয়াতেও পাওয়া যায়।
একইভাবে, পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, “যারা সহজ-সরল, সতী, ঈমানদার নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত। আর তাদের জন্য রয়েছে ভয়ানক শাস্তি।”
আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন:
“আল্লাহ তাআলা বিদ্রোহী ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীর মতো কাউকে দুনিয়াতে এত দ্রুত শাস্তি দেন না, যেমন তিনি তাদের দিয়ে থাকেন। এমনকি আখিরাতের শাস্তিও জমা না রেখে দুনিয়াতে তা আরম্ভ করে দেন।”
আল-কোরআনে আরও এসেছে:
“যখন তারা ক্ষমতা পায়, তখন পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করে। তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হয়। ফলে তিনি তাদের বধির করেন ও তাদের দৃষ্টিশক্তিকে অন্ধ করে দেন।”
আরেকটি ভয়ংকর পাপ হলো ব্যভিচার।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: রাসূল (সা.) বলেন,
“যখন কেউ ব্যভিচার করে, তখন ঈমান তার শরীর থেকে বের হয়ে মাথার ওপর মেঘের মতো ভেসে থাকে। ব্যভিচার শেষ হলে ঈমান আবার ফিরে আসে।”
এ সব হাদিস ও আয়াতে স্পষ্ট, কিছু পাপ এমন—যার শাস্তি দুনিয়া থেকেই শুরু হয়, আখিরাতে তা বহুগুণ বেড়ে ফিরে আসে।
মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে এসব ভয়ংকর গুনাহ থেকে হেফাজত করুন এবং দুনিয়া ও আখিরাতে নিরাপদ রাখুন।
শেখ ফরিদ