ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সেহরি খাওয়ার সময় ফজরের আজান হয়ে গেলে রোজা হবে?

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ২ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১২:০৮, ২ মার্চ ২০২৫

সেহরি খাওয়ার সময় ফজরের আজান হয়ে গেলে রোজা হবে?

সংগৃহীত

 

অনেক সময় আমাদের সেহরিতে খেতে দেরি হয়ে যায়। দেখা যায়, সেহরি খাওয়া শুরু করেছে কিংবা খাওয়া শেষ হয়নি এমন সময় আজান দিয়ে দেয়; এমন সময় আমদের মনে প্রশ্ন জাগে রোজা হবে কী ?

ফজরের আজান শুরু হয়ে গেলে সেহরি খাওয়া যাবে না। কারণ, কোরআনে  সুস্পষ্টভাবে সেহরি শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।


আল্লাহ তায়ালা বলেন:
"তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ না কালো সুতো থেকে সাদা সুতো (ভোরের আলো) স্পষ্ট হয়ে যায়। এরপর রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো।"
(সূরা আল-বাকারা: ১৮৭)


এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, সুবহে সাদিক (ভোরের আলো ফুটতে শুরু করা) পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া করার অনুমতি রয়েছে। সুবহে সাদিকের সময়েই ফজরের আজান দেওয়া হয়। আজান শুরু হয়ে গেলে ধরা হয় যে ভোরের আলো ফুটে গেছে এবং তখন আর পানাহার করার অনুমতি নেই।


বিশ্বব্যাপী ইসলামি স্কলাররা একমত যে, ফজরের আজান শুরু হওয়ার পর সেহরি খাওয়া উচিৎ নয়। নবী মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন:
"বিলালের আজান তোমাদের সেহরি খাওয়া থেকে বিরত রাখবে না, বরং ইবনে উম্মে মাকতুমের আজান শুনে তোমরা পানাহার বন্ধ করবে।"
(বুখারি, হাদিস: ১৯১৯)

ফজরের আজান শুরু হয়ে গেলে আর সেহরি খাওয়া বৈধ নয়। কারণ এটি সুবহে সাদিকের সময়ের শুরু এবং এটাই রোজার শর্ত অনুযায়ী পানাহার বন্ধ করার নির্ধারিত সময়।

রোজা রাখার জন্য সেহরি খাওয়া গুরুত্বপুর্ণ। রাসূল সা. বলেছেন,‘আহলে কিতাব তথা ইহুদি-খ্রিস্টান আর মুসলমানদের রোজার মধ্যে শুধু সাহরি খাওয়াই পার্থক্য। অর্থাৎ তারা সাহরি খায় না আর আমরা সাহরি খাই।’ (মুসলিম, হাদিস, ১৮৪৩; তিরমিজি, হাদিস, ৬৪২)

 

অপর এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা সাহরি খাও, কারণ সেহরিতে বরকত আছে।’ (বুখারি, হাদিস, ১৯২৩)

সেহরি কিছুটা দেরিতে করার কথা বলা হয়েছে হাদিসে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তিনটি কাজ নবুয়তের আদর্শের অন্তর্ভুক্ত; জলদি ইফতার করা, দেরি করে (শেষ সময়ে) সেহরি খাওয়া এবং নামাজে ডান হাতকে বাম হাতের উপর রাখা। (তাবারানী, মুজাম, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ২/১০৫)

 

যদিও আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেহরি খাওয়ার বিষয় কিছুটা ছাড় দিয়েছেন। হাদিসে তিনি বলেন , হাতে খাবার বা পানির পাত্র থাকলে আজান হয়ে গেলেও তা শেষ করতে। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে তা না করাই উত্তম।

 

রাসূল (সঃ) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ খাবার পাত্র অথবা পানির পাত্র হাতে নেয় আর এমতাবস্থায় আযান হয়ে যায়, তখন সে যেন তা রেখে না দেয়; বরং খাওয়া শেষ করে’ (আবুদাঊদ হা/২৩৫০; মিশকাত, হা/১৯৮৮ ‘ছওম’ অধ্যায়; নববী, আল-মাজমূ‘ ৬/৩৩৩


রমজান হলো সংযমের মাস। এ সময় সময়ের প্রতি যত্নবান হওয়া এবং আল্লাহর নির্ধারিত নিয়ম মেনে চলাই প্রকৃত মুত্তাকির পরিচয়। তাই আমরা নির্ধারিত সময়ে ইফতারি করবো।

 

আফিয়া

 

×