
ছবি: সংগৃহীত।
বাংলা প্রবাদেই আছে—"মাছে-ভাতে বাঙালি"। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় মাছ থাকা যেন আবশ্যিক। পুষ্টির উৎস হিসেবে মাছের তুলনা নেই, চিকিৎসকরাও স্বাস্থ্যকর মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে সব ধরনের মাছ শরীরের জন্য উপকারী নয়। কিছু মাছ ভুল করে খেলে হতে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি, এমনকি মৃত্যুও। এসব মাছ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।
অনলাইন স্বাস্থ্য কোচিং প্ল্যাটফর্ম ‘নিউট্রিসেন্স’-এর তালিকাভুক্ত পুষ্টিবিদ ওয়ালেরিয়া সাইডেল জানিয়েছেন, কিছু মাছ রয়েছে যেগুলো শরীরে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। নিচে ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত এমন কয়েকটি মাছের তালিকা দেওয়া হলো:
১. বড় মাগুর মাছ
বাজারে এখন বড় আকারের মাগুর মাছ সহজেই পাওয়া যায়। তবে দ্রুত বড় করার জন্য এই মাছে স্টেরয়েড বা হরমোন ইনজেকশন দেওয়া হয়। এসব রাসায়নিক মানুষের শরীরে প্রবেশ করে লিভার, কিডনি এমনকি হরমোন ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
২. টুনা মাছ (Tuna)
বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হলেও টুনা মাছের শরীরে উচ্চমাত্রার পারদের উপস্থিতি রয়েছে। বিশেষ করে যেসব স্থানে এই মাছ চাষ করা হয় সেখানে এন্টিবায়োটিক ও হরমোন প্রয়োগ করা হয়, যা গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর।
৩. ম্যাক্রেল মাছ (Mackerel)
এই মাছেও পারদের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। পারদ জমে থাকতে পারে দেহে, যা স্নায়ু ও মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘদিন খেলে ক্যান্সার, স্মৃতিভ্রংশ বা হরমোনগত জটিলতা দেখা দিতে পারে।
৪. মাকাল মাছ
শিল্প ও কৃষি বর্জ্য খেয়ে বেঁচে থাকা এই মাছের দেহে বিষাক্ত উপাদান প্রবেশ করে। দূষিত পানিতে চাষ হওয়ায় মাকাল মাছ শরীরের জন্য বিপজ্জনক।
৫. পাঙ্গাস মাছ
কম খরচে উৎপাদন ও দ্রুত বাড়াতে খামারে এই মাছের জন্য বিষাক্ত রাসায়নিক, কীটনাশক এবং বিভিন্ন ফিড ব্যবহার করা হয়। গবেষণা বলছে, এতে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৬. তেলাপিয়া মাছ
জনপ্রিয় এই মাছেও রয়েছে উচ্চমাত্রার ক্ষতিকর ফ্যাট। এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়, যা হৃদরোগ ও বাত, হাঁপানির মতো সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
সব মাছই মূলত প্রাকৃতিকভাবে উপকারী, কিন্তু অসতর্ক খামার ব্যবস্থাপনা, দূষিত পানি ও রাসায়নিক ব্যবহার এসব মাছকে ক্ষতিকর করে তুলেছে। তাই বাজার থেকে মাছ কেনার সময় সতর্ক থাকুন, বিশ্বস্ত উৎস থেকে মাছ কিনুন এবং প্রক্রিয়াজাত মাছ এড়িয়ে চলুন—এটাই সুস্থ থাকার অন্যতম উপায়।
নুসরাত