ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যেসব খাবার খেলে বাচ্চার ব্রেইন ভালো হবে

প্রকাশিত: ১২:৪৪, ৩০ মে ২০২৫

যেসব খাবার খেলে বাচ্চার ব্রেইন ভালো হবে

ছবি: সংগৃহীত।

শিশুদের ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিকর খাবার কতটা গুরুত্বপূর্ণ—সেই বিষয়ে সম্প্রতি মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক এবং বর্তমানে কানাডার আলবার্টা প্রদেশে স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবী হিসেবে কর্মরত ডা. শাহনাজ চৌধুরী।

এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “প্রত্যেক বাবা-মারই স্বপ্ন থাকে তাদের সন্তান লেখাপড়ায় মনোযোগী হবে, স্মৃতিশক্তি ভালো থাকবে এবং ক্লাসে সেরা ফলাফল করবে। কিন্তু এই স্বপ্ন পূরণের জন্য প্রথম শর্ত হলো শিশুর সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করা।”

ডা. চৌধুরী বলেন, শিশুর নিউরন ডেভেলপমেন্ট ও ব্রেইন ফাংশন উন্নত করতে কয়েকটি বিশেষ খাবারের ভূমিকা অপরিসীম। যেমন:

ডিম: 
এতে থাকা ভিটামিন বি১২, বি৬, কোলিন ও ফোলেট নিউরনের গঠন এবং স্মৃতিশক্তি উন্নয়নে সাহায্য করে।

সামুদ্রিক মাছ: 
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ এসব মাছ ব্রেইনের ফ্যাট কনটেন্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশ পূরণ করে এবং স্নায়ুকোষ তৈরি করে।

হলুদ: 
কারকিউমিন নামক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ব্রেইনের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। দুধের সঙ্গে হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।

মিষ্টি কুমড়ার বিচি: 
এতে থাকা জিংক ও ম্যাগনেসিয়াম ব্রেইনের সিগন্যাল ট্রান্সমিশন প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং ফ্রি রেডিকেল থেকে সুরক্ষা দেয়।

বাদাম জাতীয় খাবার: 
কাজু, পেস্তা, ওয়ালনাট, এমনকি চিনাবাদামও ব্রেইনের ফাংশন এবং মেমোরি পাওয়ার বাড়াতে সাহায্য করে।

তিনি আরও বলেন, “শিশুর শারীরিক বৃদ্ধির পাশাপাশি তার ব্রেইন ফাংশন উন্নয়নের জন্যও প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, হেলদি ফ্যাটসহ প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্টস নিশ্চিত করা জরুরি। ডিম ও দুধ প্রতিদিন খাওয়ানো উচিত এবং অন্যান্য খাবারগুলোও পর্যায়ক্রমে খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।”

এছাড়াও বর্তমান সমাজে শিশুদের মানসিক চাপে থাকার বিষয়টি নিয়েও সতর্ক করেছেন ডা. চৌধুরী। তিনি বলেন, “আমরা আগে ভাবতাম শুধু বড়রাই স্ট্রেসে থাকে। কিন্তু এখনকার শিশুরাও নানা সামাজিক, পারিবারিক ও অর্থনৈতিক চাপে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়, যা সরাসরি তাদের ব্রেইন ফাংশনে প্রভাব ফেলে।”

শিশুর খাদ্য, ঘুম, মানসিক স্বাস্থ্য ও খেলাধুলার প্রতি যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনার যত্নই শিশুকে একজন সফল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। আপনি যদি সঠিকভাবে তার যত্ন নেন, তাহলে সে একদিন সমাজে শীর্ষস্থানে পৌঁছাবে—এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব।”

ডা. শাহনাজ চৌধুরীর এই পরামর্শ নিঃসন্দেহে অভিভাবকদের জন্য একটি সময়োপযোগী দিকনির্দেশনা। শিশুর সামগ্রিক বিকাশে খাদ্য ও মানসিক সুস্থতার গুরুত্ব নতুনভাবে ভাবতে উৎসাহিত করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মিরাজ খান

×