ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৫

ধূমপানের ৫টি মারাত্মক প্রভাব যা মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে

প্রকাশিত: ১২:৩২, ৩১ মে ২০২৫

ধূমপানের ৫টি মারাত্মক প্রভাব যা মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে

ছবিঃ সংগৃহীত

প্রতি বছর ৩১ মে পালিত হয় বিশ্ব তামাকবিরোধী দিবস, যেখানে তামাকের স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানো হয়। এবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর ঘোষিত থিম: “Unmasking the Appeal: Exposing Industry Tactics on Tobacco and Nicotine Products”, অর্থাৎ “আকর্ষণের মুখোশ খুলে দাও: তামাক ও নিকোটিন পণ্যে শিল্পের প্রতারক কৌশল উদঘাটন”। এই প্রচারণার লক্ষ্য হলো তামাক কোম্পানিগুলোর সেই কৌশলগুলো প্রকাশ্যে আনা, যার মাধ্যমে তারা ধূমপানকে আকর্ষণীয় করে তোলে।

ধূমপান যে ফুসফুস ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গের জন্য ক্ষতিকর, তা সকলেই জানে। তবে এতে মানসিক স্বাস্থ্যও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়—যা অনেকেই উপেক্ষা করেন। আমাদের সমাজে ‘চা-সিগারেট’ বিরতি একটি সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে, যেখানে একে মানসিক বাধা দূর করার হাতিয়ার হিসেবে দেখা হয়। ধূমপানকে অনেকে চাপ কমানোর উপায় বলেও মনে করেন। তবে বাস্তবে, এটি মানসিক স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটায়।

ডা. পবিত্রা শঙ্কর, যিনি আকাশ হেলথকেয়ার-এর মনোচিকিৎসক, এইচটি লাইফস্টাইলকে বলেন, “ধূমপান ছাড়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হতে শুরু করে। মানুষ তখন শান্ত বোধ করে, ভালো ঘুমায় এবং নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়। মেজাজ ভালো হয়, আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে।” 

তিনি পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় ব্যাখ্যা করেন, যেভাবে ধূমপান আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে:

মিথ্যা প্রশান্তির অনুভূতি
ধূমপান অনেক সময় চাপ কমাতে বা আরাম পেতে করা হয়। কিন্তু নিকোটিন কেবল অস্থায়ীভাবে মনকে শান্ত করে। এর প্রভাব শেষ হলে উদ্বেগ ও রাগ বেড়ে যায়। ধীরে ধীরে, মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে নিকোটিনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

বিষণ্নতার ঝুঁকি বৃদ্ধি
গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপায়ীরা অ-ধূমপায়ীদের তুলনায় বিষণ্নতায় বেশি ভোগেন। নিকোটিন মস্তিষ্কে মেজাজ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে, যার ফলে ক্লান্তি, দুঃখ এবং জীবনের প্রতি আগ্রহহীনতা দেখা দেয়।

ঘুমের সমস্যা
ধূমপান গভীর ঘুমে বাধা সৃষ্টি করে। অনেক ধূমপায়ী নিদ্রাহীনতা, ঘুমের ব্যাঘাত কিংবা খারাপ ঘুমে ভোগেন। আর ঘুম খারাপ হলে মানসিক চাপ আরও বাড়ে, যা একটি নেতিবাচক চক্র তৈরি করে।

দীর্ঘমেয়াদে চাপ আরও বাড়ায়
সিগারেটকে অনেকেই চাপমুক্তির উপায় ভাবলেও, এটি শরীরের কর্টিসল নামক চাপ হরমোন বাড়িয়ে তোলে। এর ফলে শরীর ও মন দীর্ঘমেয়াদে আরও বেশি চাপগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

মানসিক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়
ধূমপানের সঙ্গে উদ্বেগজনিত রোগ এবং কিছু ক্ষেত্রে স্কিজোফ্রেনিয়ার মতো মানসিক রোগের ঝুঁকি বাড়ার সম্পর্ক পাওয়া গেছে। এটি শুধু শারীরিক নয়, একপ্রকার মানসিক ফাঁদও বটে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপান ছাড়া মানেই শুধু ফুসফুস বাঁচানো নয়—এটি মনকেও মুক্ত করে।

বিশ্ব তামাকবিরোধী দিবসে এই বার্তাই দেওয়া হচ্ছে—আপনার মানসিক সুস্থতার জন্যও আজই সিগারেটকে বলুন ‘না’।

সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস 

নোভা

×