ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তামাক ছাড়তে প্রিয়জনকে সাহায্য করবেন যেভাবে

প্রকাশিত: ১৯:৫২, ১ জুন ২০২৫

তামাক ছাড়তে প্রিয়জনকে সাহায্য করবেন যেভাবে

ছবি: সংগৃহীত।

তামাক একটি মারাত্মক আসক্তি। এতে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানুষ।। বাংলাদেশেও ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে অসংখ্য মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন। কিন্তু তামাক ছাড়ার প্রক্রিয়ায় প্রিয়জনদের সহায়তা একটি বড় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যেভাবে সহায়তা করবেন:
১. সমঝোতা ও সহানুভূতির মাধ্যমে কথা বলুন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথমেই তামাক ব্যবহারকারীকে দোষারোপ না করে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করতে হবে। কেন তিনি তামাক সেবন করছেন, কীভাবে শুরু হয়েছে—এসব জানতে হবে। কাউকে ছোট করে নয়, বরং সহানুভূতির সাথে কথা বললে বদল সম্ভব হয়।”

২. তামাক ছাড়ার সুবিধাগুলো বুঝিয়ে বলুন।
তামাক ছাড়লে কী কী উপকার হতে পারে—যেমন: শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ হওয়া, ঘ্রাণ ও স্বাদ ফিরে পাওয়া, হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমা—এগুলো মনে করিয়ে দিন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শের কথা বলুন।

৩. লক্ষ্য নির্ধারণে সাহায্য করুন।
কোন তারিখ থেকে তামাক ছাড়বেন, কীভাবে ধাপে ধাপে কমাবেন—এমন একটি পরিকল্পনা করতে উৎসাহ দিন। সেই লক্ষ্য অনুযায়ী তাকে মোটিভেট করুন।

৪. প্রতিটি অগ্রগতিকে উৎসাহ দিন।
প্রিয়জন তামাক না খেয়ে একটি দিন পার করলে, তাঁকে প্রশংসা করুন। ছোট ছোট সাফল্যগুলোকে গুরুত্ব দিন। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

৫. পরিবেশ সহায়ক করুন।
বাসা বা কর্মস্থলে তামাকমুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন। ছুতো করে সিগারেট বা অন্য তামাকজাত দ্রব্য চোখের সামনে রাখবেন না। পারিবারিক বা বন্ধুত্বপূর্ণ সাপোর্ট থাকলে মানুষ তামাক ছাড়তে বেশি আগ্রহী হয়।

৬. পেশাদার সহায়তার কথা বলুন।
অনেক ক্ষেত্রে কাউন্সেলিং বা চিকিৎসকের সহায়তা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়ে। প্রয়োজন হলে নিকটস্থ মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বা তামাক নিয়ন্ত্রণ সেবা কেন্দ্রের সাহায্য নিতে বলুন।

৭. relaps হলে দোষারোপ নয়, সাহস দিন।
অনেকে চেষ্টা করেও একবারে তামাক ছাড়তে পারেন না। এক্ষেত্রে তাদের কটাক্ষ না করে আশ্বস্ত করুন যে আবার চেষ্টা করলে সফল হওয়া সম্ভব।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: তামাক আসক্তি কেবল অভ্যাস নয়, এটি মানসিক ও শারীরিক নির্ভরতা। তাই প্রিয়জনের সহায়তা ও ইতিবাচক পরিবেশ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তামাক ছাড়ার প্রক্রিয়ায় প্রিয়জনেরা যদি সচেতন, সহানুভূতিশীল ও উৎসাহদাতা হিসেবে পাশে থাকেন, তবে একজন আসক্ত ব্যক্তি নতুন জীবন শুরু করতে পারেন আরও সহজে। শুধু ইচ্ছাশক্তিই নয়, প্রিয়জনের ভালোবাসাও হতে পারে বদলের অনুপ্রেরণা।

মিরাজ খান

×