ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

খাগড়াছড়িতে টানা বর্ষণে পাহাড় ধস, যান চলাচল বন্ধ, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ২০:৪৩, ১ জুন ২০২৫

খাগড়াছড়িতে টানা বর্ষণে পাহাড় ধস, যান চলাচল বন্ধ, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

টানা ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ির জনজীবন থমকে গেছে। নেন্সীবাজার,মহালছড়ির ধুমনীঘাট ও ভুয়াছড়ির রাজশাহী টিলা এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সড়ক সচল করতে কাজ করছে।

দীঘিনালা লংগদু আঞ্চলিক সড়কের ইয়ারং ছড়ি এলাকায় পাহাড় ধসে মাটি ও গাছ পড়ায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়ির চেঙ্গী, মাইনী নদীসহ স্থানীয় খাল ও ছড়ার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এদিকে বর্ষণ অব্যাহত থাকায় চেঙ্গী, মাইনী ও ফেনী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

রবিবার সকাল থেকে মাইনী নদীর পাহাড়ি ঢলে দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া এ সড়কের কয়েকটি নিচু স্থানে পানি উঠায় যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। ভারী বর্ষণে গুইমারা উপজেলার ছড়ার পানি বেড়ে জালিয়াপাড়া বাজারে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

পাহাড় ধসে জেলা সদরের শালবন, ভুয়াছড়ি ও গুগড়াছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় জেলায় বন্যার আশঙ্কার পাশাপাশি ব্যাপক পাহাড় ধসের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সবুজবাগ ও শালবনসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে প্রশাসন। জেলায় ১২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।

খাগড়াছড়ির স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা জানিয়েছেন, বন্যা ও পাহাড় ধস মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। কিছু স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলে তা অপসারণ করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। সেজন্য খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।

তিনি আরও বলেন , পাহাড় ধসের জন্য মাইকিং চালাচ্ছি নিরাপদে সরে আসার জন্য। সদর পৌরসভার আওতায় ২০টি কেন্দ্র সহ সারা জেলায় আমরা ১২৫ টি আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে রেখেছি জনগণের আশ্রয় নেওয়ার জন্য। যেসব এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে আমরা মনে করছি সেখানে আমরা এখনই খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করছি। যাতে লোকজন আসে এবং আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করে অন্তত নিজের নিরাপত্তাটুকু নিশ্চিত করে।

একজন উদ্ধারকর্মী জানান, সকাল থেকে বুয়াছড়ির একটা রাস্তায় পাহাড় ধসে রাস্তা বন্ধ হয়েছিল। সেটা পরিস্কার করেই নেন্সি বাজার রাস্তা রোডের দিঘিনালা রোডে কাজ করতে ছলে আসেন তারা। এখানে উদ্ধার কাজ চলছে। যদি অন্য কোথাও খবর পাওয়া যায় তারা সেখানেও যাবেন দ্রুত যান চলাচলের মত অবস্থা করে দেয়ার জন্য।  

 

সানজানা

×