
ছবি: সংগৃহীত
স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের খাদ্যতালিকায় আজ চিয়া সিডের নাম বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উচ্চারিত হয়। এই ছোট্ট বীজ দেখতে যতই সরল, তার গুণে তা এক প্রকার স্বাস্থ্যসম্পদের আধার। চিয়া সিডের ইতিহাস বহুপ্রাচীন; প্রায় ৫০০০ বছর আগের মেক্সিকো ও কেন্দ্রীয় আমেরিকার আদিবাসী সভ্যতাগুলোতে এটি খাদ্যের অন্যতম অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। মায়া ও আজটেকরা চিয়া সিডকে শুধু পুষ্টির উৎস হিসেবেই নয়, তাদের সৈন্যদের শক্তি ও সহনশীলতা বৃদ্ধির জন্য ‘শক্তির বীজ’ হিসেবে ব্যবহার করত। বছর হাজার পেরিয়েও এর জনপ্রিয়তা কমেনি; বরং আজকের আধুনিক যুগে ‘সুপারফুড’ হিসেবে বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত।
কেন এত জনপ্রিয়?
চিয়া সিড পানিতে ভিজালে ফুলে ওঠে এবং এক ধরনের জেলি জাতীয় আবরণ তৈরি করে, যা হজমে সহায়ক। এই অভিনব বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে এটি এখন নিয়মিত খাদ্যসঙ্গী। ছোট্ট এই বীজে লুকিয়ে আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রচুর ফাইবার, প্রোটিন ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ, যা শরীরের নানা দিক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
পুষ্টিগুণে অনন্য
১. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
২. ফাইবার: হজম ভালো রাখে ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে।
৩. প্রোটিন: নিরামিষভোজীদের জন্য দারুণ প্রোটিন উৎস।
৪. ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস: হাড় ও দাঁতের গঠনে সহায়ক।
৫. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে ও দেহে ফ্রি-র্যাডিকেলের ক্ষতি কমায়।
স্বাস্থ্য উপকারিতা
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিসে উপকারী: রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
হৃদযন্ত্র ভালো রাখে: রক্তচাপ ও খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে ভূমিকা রাখে।
ত্বক ও চুলে পুষ্টি যোগায়: ভিতর থেকে শরীর সুস্থ থাকলে বাইরেও তার প্রভাব পড়ে।
কীভাবে খাবেন?
এক গ্লাস পানিতে ১ চা চামচ চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে দিন ৩০ মিনিট। জেলির মতো হয়ে গেলে লেবু দিয়ে পান করতে পারেন। স্মুদি, ওটস, দই, সালাদ বা চিয়া পুডিংয়েও ব্যবহার করা যায়।
সতর্কতা
চিয়া সিড খাওয়ার আগে অবশ্যই ভিজিয়ে নেওয়া উচিত, না হলে হজমে সমস্যা হতে পারে। অতিরিক্ত খেলে গ্যাস বা পেটের অস্বস্তি হতে পারে। দিনে ১-২ চা চামচ যথেষ্ট।
ছোট এই বীজে লুকিয়ে আছে বিশাল পুষ্টিমূল্য। প্রাকৃতিক উপায়ে শরীর সুস্থ রাখতে চাইলে চিয়া সিড হতে পারে আপনার প্রতিদিনের সঙ্গী।
আবির