
ছবিঃ সংগৃহীত
এডিএইচডি, বা Attention Deficit Hyperactivity Disorder, একটি জটিল নিউরোডেভেলপমেন্টাল ব্যাধি যার কারণ এখনো সম্পূর্ণরূপে জানা যায়নি। তবে সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা বলছে—এই রোগের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে জেনেটিক কারণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৭০-৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে পারিবারিক বা বংশগত প্রভাবই মূল চালিকা শক্তি। গবেষণায় দেখা গেছে, ডোপামিন ও নোরএপিনেফ্রিন সংশ্লিষ্ট জিনের পরিবর্তনের সঙ্গে এডিএইচডি-এর ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রয়েছে।
শুধু জিন নয়, পরিবেশগত কারণও ঝুঁকি বাড়াতে পারে। গর্ভাবস্থায় ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ, সীসার মতো বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শ, কম জন্ম ওজন বা অকাল জন্ম এবং শৈশবে অবহেলা বা নির্যাতন—এসব ফ্যাক্টরকেও সন্দেহ করা হচ্ছে। যদিও এই কারণগুলোর প্রভাব এখনও বৈজ্ঞানিকভাবে সম্পূর্ণ নিশ্চিত নয়।
মস্তিষ্কের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। মনোযোগ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে যুক্ত মস্তিষ্কের অংশগুলো যেমন প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স, বেসাল গ্যাংলিয়া ও অ্যান্টেরিয়র সিংগুলেট কর্টেক্সে গঠনগত ও কার্যকরী ত্রুটি পাওয়া গেছে। নিউরোট্রান্সমিটার ভারসাম্যহীনতা—বিশেষ করে ডোপামিন ও নোরএপিনেফ্রিন—এডিএইচডি ত্বরান্বিত করে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, খারাপ অভিভাবকত্ব বা খাদ্যাভ্যাসকে দায়ী করা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ভিত্তিহীন। এ ধরনের ভুল ধারণা থেকে দূরে থাকাই উত্তম।
সারকথা—এডিএইচডি কোনো একক কারণে হয় না। এটি একটি বহুস্তরীয় ও বহু-কারণ নির্ভর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, যার সমাধানে প্রয়োজন আরও গভীর গবেষণা।
পৃথী