ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভগ্নিপতির মৃত্যুর ৩৫ দিন পর ভাইয়ের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ১ জুন ২০২৫; আপডেট: ২০:৫০, ১ জুন ২০২৫

ভগ্নিপতির মৃত্যুর ৩৫ দিন পর ভাইয়ের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

দুবাইয়ে কর্মরত দুই ভারতীয় ভগ্নিপতির এক মাসের ব্যবধানে মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে একটি কেরালার পরিবারে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রথমে মারা যান মোহাম্মদ রশিদ। তার মৃত্যুর ৩৫ দিন পর পানিতে ডুবে প্রাণ হারান বোনের স্বামী মোহাম্মদ সাদিক।

রশিদ একটি সাধারণ ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানে আউটডোর সেলসের কাজ করতেন। ২২ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ২৫ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার স্ত্রী মেহনাজ ও ১০, ৪ ও ৩ বছর বয়সী তিন সন্তান ভারতে অবস্থান করছেন। রশিদের ছোট ভাই মঈদীন কুনহি, যিনি একই প্রতিষ্ঠানের ইনডোর সেলস বিভাগে কাজ করেন, জানান, “ভাই আমার কোলে মাথা রেখেই মারা যায়। এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারি না।” রশিদের মরদেহ ২৭ এপ্রিল কেরালায় নিয়ে যান মঈদীন, বড় ভাই আবদুস সালাম ও ভগ্নিপতি মোহাম্মদ সাদিক।

দ্বিতীয় ট্র্যাজেডি:  ৩৯ বছর বয়সী সাদিক ছিলেন রশিদের বোন ফারশানার স্বামী। তিনি দুবাইয়ের স্পাইস সুকে একটি রেস্তোরাঁয় ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতেন এবং রশিদ, মঈদীন ও সালামের সঙ্গে একই বাসায় থাকতেন। রশিদের মৃত্যু পরবর্তী ৪০ দিনের ধর্মীয় শোকানুষ্ঠান শেষে ৩০ মে, ফারশানার কাসারাগোড জেলার বাড়ির পাশে জমে থাকা পানিতে পড়ে মারা যান সাদিক। “আমরা বড় ভাই আবদুস সালামের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম, মাত্র ১০০ মিটার দূরে। হঠাৎ সাদিক পিছলে ডুবে যায়,” জানান মঈদীন। “আমি লাফ দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করি। নিজেই প্রায় ডুবে যাচ্ছিলাম। শেষমেশ পাড়ার লোকেরা আমাকে টেনে তোলে, কিন্তু সাদিককে আর বাঁচানো যায়নি।” সাদিক রেখে গেছেন স্ত্রী ফারশানা এবং ১১, ৭ ও ১৪ মাস বয়সী তিন সন্তানকে।

মঈদীন বলেন, “আমরা তিনজনই একসঙ্গে থাকতাম, একসঙ্গে খেতাম, উৎসব করতাম। এখন দুজনই চলে গেছে, আমার চোখের সামনে। কীভাবে এই যন্ত্রণা নিয়ে বাঁচব জানি না।” মঈদীন জানান, ১০ জুন তাদের দুবাই ফিরে যাওয়ার কথা ছিল রশিদের শোকানুষ্ঠান শেষে। কিন্তু এখন তারা সাদিকের জানাজা ও কুলখানি আয়োজন করছেন। “বোনকে আমি কীভাবে সান্ত্বনা দেব? মাত্র এক মাসের ব্যবধানে সে হারাল ভাই ও স্বামীকে। এটা এক অপূরণীয় ক্ষতি।”

রশিদের মরদেহ কেরালায় পাঠাতে দুবাইয়ের কেরালা মুসলিম কালচারাল সেন্টার (KMCC) সহায়তা করে। সাদিকের ভাইরাও ইতোমধ্যে দুবাই থেকে দেশে ফিরেছেন। পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীরা। তবে এই অপ্রত্যাশিত দুঃখের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এখনও হিমশিম খাচ্ছে পরিবারটি।

শহীদ

×