
ছবি: সংগৃহীত
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা ও পরিকল্পিত দুর্ভিক্ষ থামাতে অবিলম্বে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের আহ্বান জানালেন জাতিসংঘের আইনি বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, এই মুহূর্তে গাজা সংকটের সবচেয়ে ভয়াবহ পর্যায় চলছে, এবং এর অবসান ঘটাতে ১৯৫০ সালের ‘Uniting for Peace’ রেজুলেশন সক্রিয় করে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদকে অনুরোধ করেছেন, যেন ওই ঐতিহাসিক রেজুলেশনের আওতায় মানবিক সহায়তা সরবরাহকারী ট্রাকের সঙ্গে শান্তিরক্ষীরা পাঠানো হয়, যাতে ইসরায়েলের ‘ক্ষুধানীতি’ ও গণহত্যা কার্যক্রম বন্ধ করা যায়।
কী এই 'Uniting for Peace'?
‘Uniting for Peace’ বা ‘শান্তির জন্য ঐক্য’ ছিল ১৯৫০ সালে কোরিয়া যুদ্ধের সময় গৃহীত একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব। সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেটো এড়াতে নিরাপত্তা পরিষদের পাশ কাটিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে রক্ষা করতে এটি ব্যবহৃত হয়।
এই রেজুলেশনের মাধ্যমে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ নিজেই শান্তিরক্ষী পাঠানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারে, যদি নিরাপত্তা পরিষদ ভেটোর কারণে অচল হয়ে পড়ে।
‘আইনগত বাধ্যবাধকতা ও নৈতিক কর্তব্য’
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এক বিবৃতিতে বলেন, “গাজায় দুর্ভিক্ষ ও গণহত্যা বন্ধ করা শুধু আইনগত বাধ্যবাধকতাই নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি নৈতিক কর্তব্য।”
তাঁরা বলেন, ইসরায়েল যে উপায়ে গাজার জনগণের খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ আটকে রেখেছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধাপরাধের আওতায় পড়ে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা এমন যে, এখনই পদক্ষেপ না নিলে ইতিহাস এই নীরবতাকে ক্ষমার চোখে দেখবে না।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও স্বাধীন পর্যবেক্ষকেরাও দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে গাজায় ইসরায়েলের অভিযান জাতিগত নিধনের পর্যায়ে পৌঁছেছে। খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং জ্বালানির সরবরাহ বন্ধ রেখে লাখো মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উচিত ‘Uniting for Peace’ রেজুলেশন সক্রিয় করে এমন এক উদ্যোগ গ্রহণ করা, যা শুধুই মানবিক সহায়তা নয়, বরং গাজার সাধারণ মানুষের জীবনের নিশ্চয়তা দেবে।
ফরিদ