
ছবি: সংগৃহীত
একটি দেশের প্রকৃত শক্তি কীসে নিহিত? কেউ বলবেন অর্থনীতিতে, কেউ বলবেন সেনাবাহিনীতে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন—একটি জাতির মূল ভিত্তি হলো তার জনগণের শিক্ষা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতা। আধুনিক বিশ্বে, যেখানে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিই অগ্রগতির চালিকাশক্তি, সেখানে শিক্ষাই হয়ে উঠেছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।
২০২৩ সালে CBRE Research-এর তথ্যভিত্তিক একটি সমীক্ষা প্রকাশ পেয়েছে, যেখানে শীর্ষ ১০টি দেশকে বেছে নেওয়া হয়েছে তাদের ২৫–৬৪ বছর বয়সী জনগণের উচ্চশিক্ষা অর্জনের হার বিবেচনায়। চমকপ্রদভাবে, এই তালিকায় ৬টি দেশ ইউরোপের। তবে কিছু নাম আপনাকে অবাক করতেও পারে।
শীর্ষ ১০টি সবচেয়ে শিক্ষিত দেশের তালিকা:
১. আয়ারল্যান্ড (ইউরোপ)
তালিকার শীর্ষে রয়েছে ইউরোপের দেশ আয়ারল্যান্ড, যেখানে প্রায় ৫২.৪ শতাংশ নাগরিক ব্যাচেলর ডিগ্রি বা তার বেশি ডিগ্রিধারী। সংখ্যায় যা প্রায় ১৮ লাখের কাছাকাছি। বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষা, প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সরকারপ্রদত্ত শিক্ষাবৃত্তির কারণে আয়ারল্যান্ড শিক্ষা খাতে অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে।
২. সুইজারল্যান্ড (ইউরোপ)
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড, যেখানে শিক্ষিত জনগণের হার ৪৬ শতাংশ। গবেষণামূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা কাঠামো এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সুইজারল্যান্ড দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চশিক্ষার কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত।
৩. সিঙ্গাপুর (এশিয়া)
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে এশিয়ার একমাত্র দেশ সিঙ্গাপুর, যার ৪৫ শতাংশ নাগরিক উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত। শিক্ষা ব্যবস্থায় উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ব্যবহার, দক্ষ শিক্ষকগণ এবং সরকারি বিনিয়োগ এই সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
৪. বেলজিয়াম (ইউরোপ)
এখানে ৪৪.১% মানুষ (প্রায় ৩৩ লাখ) উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত, যা ইউরোপের গড়ের চেয়েও বেশি।
৫. যুক্তরাজ্য
ইউকে-তে ৪৩.৬% বা প্রায় ১ কোটি ৯১ লাখ মানুষ ব্যাচেলর ডিগ্রি বা তার চেয়ে বেশি ডিগ্রিধারী।
৬. নেদারল্যান্ডস
এই দেশের ৪২% মানুষ (প্রায় ৪৮ লাখ) উচ্চশিক্ষিত, যারা উদ্ভাবন ও সমাজ ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
৭. যুক্তরাষ্ট্র
শুধুমাত্র শতাংশ হিসেবে না, মোট ডিগ্রিধারী সংখ্যায় (৭৮.২ মিলিয়ন) যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে শীর্ষে। তবে শতাংশের হিসেবে এটি ৭ম স্থানে (৪০.৩%)।
৮. অস্ট্রেলিয়া
এখানে ৩৯.৭% মানুষ, অর্থাৎ ৬৯ লাখ নাগরিক, ব্যাচেলর ডিগ্রির অধিকারী।
৯. ইসরায়েল
ইসরায়েলে ৩৯.৭% মানুষের উচ্চশিক্ষা রয়েছে।
১০. সুইডেন
তালিকার শেষ হলেও গুরুত্বের দিক দিয়ে শেষে নয় সুইডেন। সুইডেনের ৩৯.৬% মানুষ, অর্থাৎ ২৬ লাখ নাগরিক, ব্যাচেলর বা তার চেয়ে বেশি ডিগ্রিধারী।
এই গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উচ্চশিক্ষা অর্জনকারী কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীই একটি দেশের উদ্ভাবনী ক্ষমতা, উৎপাদনশীলতা এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি। এক্ষেত্রে ইউরোপের প্রাধান্য লক্ষণীয় হলেও, এশিয়ার সিঙ্গাপুর এবং মধ্যপ্রাচ্যের ইসরায়েল উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
মুমু