
ছবিঃ সংগৃহীত
ইংল্যান্ডের এসেক্সের হ্যাভারিং-অ্যাট-বাওয়ার গ্রামে কয়েক সপ্তাহ ধরে একটি বাজপাখির হামলায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা। পাখিটির আক্রমণ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে ফেলেছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে, যেখানে শিক্ষার্থীদের মাঠে খেলাধুলা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানায়, শিক্ষার্থীদের দেওয়া নাম ‘ব্রেন্ডা’ এখন আর আদরের প্রতীক নয়—বরং ইস্টারের ছুটি শেষে এই বাজপাখি পরিণত হয়েছে গ্রামের আতঙ্কে। হ্যাভারিংয়ের ডেম টিপিং প্রাইমারি স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, পাখিটি একটি সুরক্ষিত প্রজাতির হওয়ায় আইন অনুযায়ী সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তাই শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ঘরের মধ্যেই রাখা হচ্ছে।
৩৭ বছর বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা নিকি ডিক্স জানান, গত মার্চে পার্কে হাঁটার সময় হঠাৎ পাখিটি তার মাথায় আক্রমণ করে। এতে তার মাথায় আঁচড় লাগে। “এরপর থেকে আমি ব্যাগ মাথার ওপর ধরে হাঁটি,” বলেন তিনি।
অন্য এক অভিভাবক লুইস হুইটল বলেন, “পুরো ঘটনাটা অবিশ্বাস্য হলেও শিশুদের জন্য দারুণ শিক্ষণীয়। ওরা এখন বাজপাখি সম্পর্কে অনেক কিছু জানছে। তবে মনে হচ্ছে, এখানে যেন পাখির অধিকার শিশুদের চেয়েও বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। আশা করি পাখিটি শিগগির উড়ে চলে যাবে, যাতে স্বাভাবিকতা ফিরে আসে।”
স্কুলের হেডমাস্টার মিস ম্যাকার্থি জানান, শিক্ষার্থীরা ব্রেন্ডাকে এতটাই ভালোবাসে যে এখন তারা পোস্টার তৈরি করে পাখিটিকে রক্ষার আহ্বান জানাচ্ছে। তারা গল্প লিখছে, প্রতিবেদন তৈরি করছে, এমনকি ছবিও আঁকছে।
মাঠে যাওয়া নিষিদ্ধ হওয়ায় স্কুলে শুরু হয়েছে ঘরোয়া বিভিন্ন আকর্ষণীয় কার্যক্রম, যেমন বোর্ড গেম, কাপ স্ট্যাকিং ও ধাঁধার প্রতিযোগিতা।
স্থানীয় প্রশাসন হ্যাভারিং কাউন্সিল জানায়, সম্ভবত বাজপাখিটি তার বাসা বা ছানাদের রক্ষা করতে গিয়ে এমন আচরণ করছে। রেসকিউ সংস্থা RSPCA’র পরামর্শে তারা এলাকা জুড়ে সতর্কতা বোর্ড টানিয়েছে।
এ রকমই আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল সম্প্রতি হ্যার্টফোর্ডশায়ারের ফ্ল্যামস্টেড গ্রামে। গত মার্চে সেখানে একটি ‘হ্যারিস হক’ প্রায় ২০ জনকে আক্রমণ করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লম্বা পুরুষরা ছিল লক্ষ্যবস্তু। এক বাসিন্দা জানান, তিনি হঠাৎ ধাক্কা খেয়ে দেখেন মাথা কেটে গেছে—পেছনে তাকিয়ে দেখেন একটি পাখি উড়ে যাচ্ছে। পরে ওই পাখিকে একজন প্রশিক্ষিত পাখিপালক ধরে ফেলেন। তার মতে, পাখিটির আচরণ হরমোনজনিত কারণে হঠাৎ পাল্টে গিয়েছিল।
এই ঘটনাগুলো স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন তুলেছে—বন্যপ্রাণীর অধিকার বনাম মানুষের নিরাপত্তা, কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
পৃথী