
ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বের প্রথম ক্যামেরা ফোন হিসেবে স্যামসাং SCH-V200-কে বিবেচনা করা হয়ে থাকে, যদিও শার্প J-SH04 মডেলকেও সেই দাবির জন্য উল্লেখ করা হয়েছে। মাত্র ০.৩৫ মেগাপিক্সেলের একটি রিয়ার ক্যামেরা এবং ২০টি ছবি সংরক্ষণের সক্ষমতা ফোনটিতে রাখা হয়েছিল।তুলনামূলকভাবে, আজকের ক্যামেরা ফোনগুলোতে ২০০ মেগাপিক্সেল সেন্সর এবং চারটি লেন্স সহ বিশাল প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দেখা গেছে।
সনি এরিকসন K750i দিয়ে শুরু হয়েছিল মোবাইল ক্যামেরার ভিন্নমাত্রার যাত্রা:
২০০৫ সালে সনি এরিকসন K750i ফোনটি বাজারে আনা হয়েছিল। এতে ২ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা, ডুয়েল LED ফ্ল্যাশ, এবং একটি লেন্স কভার যুক্ত করা হয়েছিল। ক্যামেরা ফিচারগুলোকে কেন্দ্র করেই ফোনটি তৈরি করা হয়েছিল — যা মোবাইল ফোনে ফটোগ্রাফির গুরুত্বকে সামনে নিয়ে এসেছিল।
আইফোন ৪-কে ধরা হয় মোবাইল ফটোগ্রাফি সংস্কৃতির পথপ্রদর্শক হিসেবে:
২০১০ সালে অ্যাপলের আইফোন ৪ বাজারে আনা হয়েছিল। এতে ৫ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা, ভিডিও রেকর্ডিং এবং LED ফ্ল্যাশ যুক্ত ছিল। কিন্তু প্রকৃত বিপ্লবটি ঘটানো হয়েছিল সফটওয়্যার ও iOS ইকোসিস্টেমের মাধ্যমে — যার মাধ্যমে ছবি শেয়ার করা, এডিট করা ও সংরক্ষণ করা সহজতর করা হয়েছিল।
নোকিয়া ৮০৮ ও লুমিয়া ১০২০ দিয়ে প্রযুক্তিগত সীমা ভেঙে দেওয়া হয়েছিল:
২০১২-১৩ সালে নোকিয়ার ৮০৮ PureView এবং লুমিয়া ১০২০ ফোন দুটি দিয়ে মোবাইল ফটোগ্রাফিতে বিশাল পরিবর্তন আনা হয়েছিল। ৪১ মেগাপিক্সেলের বিশাল সেন্সর, জেইস লেন্স এবং RAW ক্যাপচার সুবিধা ফোনে যুক্ত করা হয়েছিল। এই প্রযুক্তি দিয়েই আধুনিক পিক্সেল-বিনিং প্রযুক্তির ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছিল।
Huawei P20 Pro দিয়ে ট্রিপল ক্যামেরা যুগ শুরু করা হয়েছিল:
২০১৮ সালে Huawei P20 Pro-এ প্রথমবারের মতো ট্রিপল ক্যামেরা সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছিল। ৪০ মেগাপিক্সেলের প্রধান সেন্সর, ৮ মেগাপিক্সেলের টেলিফটো এবং ২০ মেগাপিক্সেলের মনোক্রোম সেন্সরের মাধ্যমে অসাধারণ ছবি তোলা হয়েছিল। নাইট মোড, স্লো মোশন এবং সফটওয়্যার কন্ট্রোলড বোকেহ প্রভাব ব্যবহার করে ছবিগুলোকে আরও নিখুঁত করে তোলা হয়েছিল।
পিক্সেল ৬ প্রো দিয়ে গুগলের ক্যামেরা আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল:
২০২১ সালে Google Pixel 6 Pro মডেলটি ব্যবহারকারীদের কাছে শীর্ষ ক্যামেরা ফোন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল। ৫০ মেগাপিক্সেলের প্রাইমারি সেন্সর, উন্নত টেলিফটো এবং শক্তিশালী AI টুলসের মাধ্যমে HDR+, নাইট সাইট ও ম্যাজিক ইরেজার ব্যবহার করে চিত্রগ্রহণের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করা হয়েছিল।
আজকের দিনে ব্যবহৃত ফোনগুলো দিয়ে ডিজিটাল ক্যামেরাকেও পিছনে ফেলা হয়েছে। ২০২৫ সালের ফ্ল্যাগশিপ ফোন যেমন Google Pixel 9 Pro এবং Xiaomi 15 Ultra ব্যবহার করে DSLR বা মিররলেস ক্যামেরার প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্যামেরা সেন্সর, অপটিক্যাল জুম, সফটওয়্যার এডিটিং টুলসহ এমন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে যা ২৫ বছর আগেও কল্পনা করা হয়নি।
ক্লাসিক ফোনগুলোর মধ্যে যেগুলোর নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে:
Sony Ericsson K750i, C902
Nokia 808 PureView, Lumia 1020
Apple iPhone 4
Samsung Galaxy S2, Note II, Note 10+
LG G2, G3
Huawei P20 Pro
Google Pixel 2 XL, Pixel 6 Pro
গত ২৫ বছরে স্মার্টফোনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ক্যামেরা বিভাগেই দেখা গেছে। ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা, নির্মাতাদের উদ্ভাবন ও সফটওয়্যারের উন্নয়নের মাধ্যমে মোবাইল ক্যামেরাকে নতুন যুগে প্রবেশ করানো হয়েছে।
নোভা