
আয়রন মানবদেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি খনিজ। এটি রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে, যা দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। আয়রনের ঘাটতি হলে ক্লান্তি, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্টসহ অ্যানিমিয়া (রক্তশূন্যতা) দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতিদিনকার খাদ্য তালিকায় কিছু প্রাকৃতিক আয়রনসমৃদ্ধ খাবার রাখলেই সহজেই এই ঘাটতি পূরণ করা যায়। চলুন জেনে নিই—আয়রনের প্রাকৃতিক উৎস হিসেবে পরিচিত ১০টি খাবারের নাম ও তাদের উপকারিতা।
আয়রনসমৃদ্ধ ১০টি প্রাকৃতিক খাবার:
১. পালং শাক
শতভাগ প্রাকৃতিক ও সস্তা আয়রনের উৎস। ১০০ গ্রামে প্রায় ২.৭ মি.গ্রা. আয়রন থাকে। পালং ভাজি বা স্যুপে দিয়ে খাওয়া যায়।
২. মসুর ও মুগ ডাল
প্রতিদিনের ডালেই লুকিয়ে রয়েছে আয়রনের ভাণ্ডার। এগুলোতে ফাইবার ও প্রোটিনও থাকে।
৩. লাল মাংস (গরু বা খাসির মাংস)
লাল মাংসে হিম আয়রন থাকে, যা শরীরে সহজে শোষিত হয়। তবে পরিমাণমতো খাওয়া উচিত।
৪. ডিম
বিশেষ করে ডিমের কুসুমে আয়রন বেশি থাকে। সকালের খাবারে সেদ্ধ ডিম রাখলে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হয়।
৫. চিনাবাদাম ও কাঠবাদাম
বাদামে আয়রনের পাশাপাশি আছে ওমেগা-৩ ও প্রোটিন। স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়া যায়।
৬. ব্রকলি
সবুজ সবজির মধ্যে ব্রকলিতে আয়রনের পাশাপাশি ভিটামিন C থাকে, যা আয়রন শোষণে সাহায্য করে।
৭. ডার্ক চকোলেট
সঠিক পরিমাণে খেলে এটি আয়রনের ভালো উৎস হতে পারে। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও থাকে।
৮. আলু
বিশেষ করে খোসাসহ সিদ্ধ আলুতে আয়রন পাওয়া যায়। তবে ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলাই ভালো।
৯. সামুদ্রিক মাছ (সারডিন, টুনা)
মাছে হিম আয়রন থাকে যা সহজে শরীর গ্রহণ করে। নিয়মিত মাছ খাওয়ার অভ্যাস আয়রনের ঘাটতি পূরণে কার্যকর।
১০. কিশমিশ ও শুকনো খেজুর
শুকনো ফলে আয়রন ও প্রাকৃতিক চিনি থাকে। কিশমিশ ভিজিয়ে খাওয়া আরও উপকারী।
আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ:
-
অতিরিক্ত ক্লান্তি বা নিঃশ্বাসে কষ্ট
-
ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
-
চুল পড়ে যাওয়া
-
নখ ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া
আয়রনের ঘাটতি রোধে ও রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে প্রতিদিনকার খাদ্যতালিকায় এই ১০টি খাবারের অন্তর্ভুক্তি অত্যন্ত কার্যকর। কৃত্রিম সাপ্লিমেন্টের চেয়ে প্রাকৃতিক খাবারই সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর সমাধান।
আঁখি