
ছবি: সংগৃহীত।
গ্রীষ্মকাল মানেই আমের মৌসুম। কাঁচা আম দিয়ে তৈরি আচার বাংলাদেশের ঘরে ঘরে অত্যন্ত জনপ্রিয়। খেতে সুস্বাদু হলেও অতিরিক্ত আমের আচার খাওয়ার ফলে শরীরের নানা সমস্যা হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদরা।
পুষ্টিবিদদের মতে, আমের আচার তৈরি করতে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে লবণ, চিনি, তেল এবং কখনো কখনো কেমিক্যাল ও সংরক্ষণকারী পদার্থ (Preservatives) ব্যবহার করা হয়। এগুলো দীর্ঘদিন সংরক্ষণের সুবিধা দিলেও মানবদেহের জন্য একাধিক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, “অতিরিক্ত লবণ ও তেল থাকা আচারের নিয়মিত সেবনে উচ্চ রক্তচাপ, হজমের সমস্যা, ওজন বেড়ে যাওয়া এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।”
যেসব ক্ষতি হতে পারে:
উচ্চ রক্তচাপ: আচারে থাকা অতিরিক্ত লবণ শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়ায়, যা হাই ব্লাড প্রেশার বাড়াতে সহায়ক।
পেটের সমস্যা: আচারে ব্যবহৃত তেল ও মসলা হজমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। অ্যাসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বাধা: অনেক আচারেই চিনি থাকে যা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়।
কিডনি ও লিভারের ওপর প্রভাব: দীর্ঘ সময় সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ কিডনি ও লিভারে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
অতিরিক্ত ক্যালোরি ও ওজন বৃদ্ধি: আচারে ব্যবহৃত তেল ও চিনি থেকে বাড়তি ক্যালোরি শরীরে সঞ্চিত হয়ে ওজন বাড়ায়।
চিকিৎসকরা বলছেন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, গ্যাস্ট্রিক, কিডনি রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের আচারে অতিমাত্রায় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রেও আচারের অতিরিক্ত ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাড়িতে তৈরি আচার অপেক্ষাকৃত নিরাপদ, তবে সেখানেও লবণ, তেল ও চিনি ব্যবহারে সংযম জরুরি। কম লবণ ও কম তেলে তৈরি, কেমিক্যালমুক্ত আচার মাঝেমধ্যে খাওয়া যেতেই পারে, তবে প্রতিদিন নয়।
আমের আচার স্বাদের জন্য যতই লোভনীয় হোক, তা নিয়মিত এবং অতিরিক্ত খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে বাজারের আচার কিনতে হলে অবশ্যই উপাদান ও মেয়াদ দেখে কেনা উচিত।
সতর্কতা ও ভারসাম্যের মধ্যেই রয়েছে স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা—এই বার্তা দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
মিরাজ খান