ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে শরীরে যে ৫টি লক্ষণ দেখা দেয়

প্রকাশিত: ০৭:৩৬, ৩ জুন ২০২৫

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে শরীরে যে ৫টি লক্ষণ দেখা দেয়

আজকের ব্যস্ত ও চাপপূর্ণ জীবনযাত্রায় নিজের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার সুযোগ মেলে খুব কমই। এই বাস্তবতায় ইউরিক অ্যাসিড বাড়া যেন হয়ে উঠেছে এক সাধারণ স্বাস্থ্যসমস্যা। শরীরে ইউরিক অ্যাসিড মূলত তৈরি হয় ‘পিউরিন’ নামের একটি যৌগ ভেঙে যাওয়ার ফলে। এই পিউরিন আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য, বিশেষ করে মাংস ও পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে থাকে।

সাধারণ অবস্থায় ইউরিক অ্যাসিড রক্তে মিশে কিডনির মাধ্যমে মূত্রে বেরিয়ে যায়। কিন্তু শরীরে যখন অতিরিক্ত পরিমাণে ইউরিক অ্যাসিড জমে কিংবা এটি ঠিকভাবে নির্গত না হয়, তখন তা বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। এই অবস্থাকেই বলা হয় হাইপারইউরিকেমিয়া।

উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড দীর্ঘমেয়াদে গাউট, কিডনির পাথরসহ নানা ব্যথাযুক্ত সমস্যা তৈরি করতে পারে। তবে ভাগ্যক্রমে শরীর শুরুতেই কিছু সতর্কতা সংকেত দেয়, যা সঠিক সময়ে চিনতে পারলে এবং কিছু সাধারণ অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে পারলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

নিচে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার ৫টি লক্ষণ তুলে ধরা হলো।

১. হঠাৎ গিঁটের ব্যথা ও ফোলা ভাব

বড় আঙুলে হঠাৎ তীব্র ব্যথা ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির অন্যতম লক্ষণ। একে বলা হয় গাউট, যা একধরনের গেঁটেব্যথা। এটি মূলত গিঁটে ইউরিক অ্যাসিড স্ফটিক জমার ফলে হয়। ব্যথা সাধারণত খুব তীক্ষ্ণ ও সহনীয়তার বাইরে হয়, যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাতে হঠাৎ করেই শুরু হয়। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে লালচে ভাব, ফোলা এবং স্পর্শে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। যদিও বড় আঙুলেই শুরু হয়, তবে গোড়ালি, হাঁটু, কনুই বা আঙুলেও এই ব্যথা ছড়াতে পারে।

২. গিঁটে অস্বাভাবিক জড়তা

গিঁট শক্ত লাগা বা চলাচলে অসুবিধা হওয়াও ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির লক্ষণ হতে পারে। বিশেষত সকালে ঘুম থেকে উঠে বা দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পর এই জড়তা বেশি অনুভূত হয়। এটি মূলত গিঁটে সৃষ্ট প্রদাহের কারণে হয়, যেখানে ইউরিক অ্যাসিড স্ফটিক গাঁটে জ্বালাভাব তৈরি করে।

৩. দুর্বলতা বা শক্তি কমে যাওয়া

যথেষ্ট ঘুমের পরও যদি সারাদিন ক্লান্তিভাব থাকে, তবে সেটিও হতে পারে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের সূচক। শরীর যখন ক্রমাগত প্রদাহের সঙ্গে লড়ে যায়, তখন তা প্রচুর শক্তি ব্যবহার করে ফেলে। এতে সাধারণত শারীরিক ক্লান্তির পাশাপাশি মানসিক ধোঁয়াশাভাব বা মনোযোগের ঘাটতিও দেখা দেয়।

৪. প্রস্রাবের রঙ ও গন্ধে পরিবর্তন

প্রস্রাবও শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের অবস্থার একটি ইঙ্গিত দেয়। মেঘলা, গাঢ় রঙের বা তীব্র গন্ধযুক্ত প্রস্রাব ইউরিক অ্যাসিডের আধিক্য নির্দেশ করতে পারে। অনেক সময় প্রস্রাব করার সময় জ্বালাভাব বা অস্বস্তিও দেখা যায়। মারাত্মক ক্ষেত্রে ইউরিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে, যার ফলে পিঠে তীব্র ব্যথা, বমিভাব বা প্রস্রাবে রক্ত দেখা দিতে পারে।

৫. ত্বকের নিচে ছোট ছোট গাঁট বা চাকা

যদি ইউরিক অ্যাসিড দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তবে ত্বকের নিচে ‘টোফাই’ নামে পরিচিত ছোট, সাধারণত ব্যথাহীন চাকা তৈরি হতে পারে। এগুলো আঙুল, কনুই বা পায়ের আঙুলের চারপাশে বেশি দেখা যায়। যদিও শুরুতে এগুলো কষ্টদায়ক নয়, তবে সময়ের সঙ্গে প্রদাহ তৈরি করে গাঁটের চলাচলে বাঁধা দিতে পারে।

 


সূত্র:https://tinyurl.com/2cez37s4

আফরোজা

×