ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কোরবানির চামড়া সংরক্ষণে কুড়িগ্রাম জেলায় নজিরবিহীন সরকারি উদ্যোগ

রফিকুল ইসলাম রফিক, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ০১:১০, ৫ জুন ২০২৫

কোরবানির চামড়া সংরক্ষণে কুড়িগ্রাম জেলায় নজিরবিহীন সরকারি উদ্যোগ

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো কুড়িগ্রাম জেলায় সরকারি পর্যায়ে ব্যাপকভাবে লবণ বিতরণ করা হয়েছে। 
জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে জেলার ৯টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভায় মোট ১,২০০ বস্তা লবণ বিতরণ করা হয়, যা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার মেট্রিক টনের সমপরিমাণ।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল ১১টায় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায়, উপজেলা পরিষদ চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে লবণ বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নয়ন কুমার সাহা।
তিনি বলেন,“প্রতি ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়। অর্থনৈতিক ক্ষতির পাশাপাশি ধর্মীয় অনুভূতিও ব্যাহত হয়। এ সমস্যা মোকাবিলায় আমরা এবার আগাম প্রস্তুতি নিয়ে ৪০টি হাফেজিয়া ও নূরানী মাদ্রাসায় চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণ সরবরাহ করেছি।”
উক্ত অনুষ্ঠানে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার, মসজিদ-মাদ্রাসার প্রতিনিধি ও স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সাতদরগাহ্ নেছারিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার বড় হুজুর মো. শহিদুল ইসলাম বলেন,“আমরা আগে কখনও সরকারের পক্ষ থেকে লবণ পাইনি। এবার ইউএনও স্যার আমাদের ডেকে চাহিদামতো লবণ দিয়েছেন। এতে আমরা অত্যন্ত খুশি ও উপকৃত হয়েছি। এখন চামড়া সংরক্ষণ নিয়ে আর চিন্তা করতে হচ্ছে না।”
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, বিভিন্ন উপজেলায় যেভাবে লবণ বিতরণ করা হয়েছে:
উপজেলা/পৌরসভা লবণের পরিমাণপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা, কুড়িগ্রাম সদর ১৬ মেট্রিক টন + ৬০০ বস্তা, উলিপুর উপজেলায় ৯.৫ মেট্রিক টন + ৩০০ বস্তা ৪০টি প্রতিষ্ঠান, টিভুরুঙ্গামারী ১৩ মেট্রিক টন + ২৪০ বস্তা ১৪টি প্রতিষ্ঠান, রাজারহাট ৪.৫ মেট্রিক টন + ৪০ বস্তা, চিলমারী ৩ মেট্রিক টন + ৬০ বস্তা ২৬টি প্রতিষ্ঠান, ফুলবাড়ী ২ মেট্রিক টন + ৪০ বস্তা ১টি প্রতিষ্ঠান, নাগেশ্বরী ৫ মেট্রিক টন + ৫৩০ বস্তা,
মোট বরাদ্দ: ১,২০০ বস্তা লবণ (প্রায় ৬,৫০০ মেট্রিক টন),সরকারি নির্দেশনা, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দক্ষ কসাই দিয়ে পশু জবাই ও চামড়া ছাড়ানো, চামড়া ছাড়ানোর ৩–৪ ঘণ্টার মধ্যে লবণ দেওয়া এবং অন্তত ১৫–২০ দিন সংরক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এসব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন,
“সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সমন্বয়ে আমরা লবণ বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছি। যাতে কেউ বঞ্চিত না হয় এবং চামড়া নষ্ট না হয়।”
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আবদুর রাজ্জাক রনি বলেন,“মসজিদ-মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চামড়া ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দায়িত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Jahan

×