সাধারণ এক গ্লাস পানি, তাতে শুধু এক চিমটি লবণ—এই সহজ অভ্যাস বদলে দিতে পারে আপনার শরীরের ভেতরের চিত্র। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন সংস্কৃতিতে লবণ মেশানো পানি পান করার প্রচলন রয়েছে। আধুনিক পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকেরাও বলছেন, সারা দিনে একবার এমন পানি পান করলে শরীরের ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় থাকে, হজমশক্তি বাড়ে, এমনকি ঘুমও ভালো হয়।
চলুন জেনে নিই, এক চিমটি লবণযুক্ত পানি পান করলে আপনি কী কী উপকার পেতে পারেন—
শরীরের পানিশূন্যতা দূর করে
লবণে থাকা সোডিয়াম শরীরের তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে। ঘাম, ব্যায়াম বা গরমের কারণে শরীর যখন পানিশূন্যতায় ভোগে, তখন লবণযুক্ত পানি দ্রুত হাইড্রেশন নিশ্চিত করে।
ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণ করে
শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া সোডিয়াম ও পটাশিয়াম ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণে লবণ কার্যকর। এটি স্নায়ু ও পেশির স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সহায়ক।
স্নায়ু ও পেশির সুস্থতা রক্ষা করে
সোডিয়াম স্নায়ু সংকেত আদান-প্রদানে ভূমিকা রাখে এবং পেশির খিঁচুনি প্রতিরোধ করে। এক চিমটি লবণযুক্ত পানি এই কাজগুলোতে সরাসরি সাহায্য করে।
হজমশক্তি বাড়ায়
লবণ লালা উৎপাদন বাড়ায় এবং হজমকারী এনজাইম সক্রিয় করে, যা খাবারকে সহজে ভেঙে পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে।
রক্তচাপের ভারসাম্য রক্ষা করে
অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বাড়ায় ঠিকই, তবে পরিমিত লবণ শরীরের তরল ভারসাম্য বজায় রাখে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
শরীরের টক্সিন দূর করে
লবণের জীবাণুনাশক গুণ শরীর থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে, ফলে ডিটক্স প্রক্রিয়া কার্যকর হয়।
ভালো ঘুম নিশ্চিত করে
লবণ কর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিন নামক স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখে। রাতে হালকা লবণযুক্ত পানি পান করলে ঘুম হয় গভীর ও স্বস্তিদায়ক।
ত্বক রাখে উজ্জ্বল ও নমনীয়
লবণে থাকা ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়াম ত্বকের জন্য উপকারী। এটি ত্বককে হাইড্রেটেড ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
শক্তি বাড়ায়, ক্লান্তি দূর করে
ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য কোষে শক্তি উৎপাদন নিশ্চিত করে। লবণযুক্ত পানি আপনাকে সারাদিন কর্মক্ষম রাখে এবং ক্লান্তি কমায়।
সতর্কতা:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ ঝুঁকিপূর্ণ, বিশেষ করে যাদের উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনির সমস্যা আছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত লবণ পান করা যাবে না।
প্রতিদিনের পানিতে এক চিমটি লবণ—এই ছোট্ট অভ্যাস হয়তো আপনাকে এনে দেবে অনেক বড় উপকার। তবে মনে রাখবেন, সব কিছুতেই ভারসাম্য জরুরি।
মিমিয়া
