ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাড়ছে ইউরিক অ্যাসিড? এই ৩টি ঘরোয়া উপায়েই মিলবে স্বস্তি!

প্রকাশিত: ০৮:০৩, ৩ জুন ২০২৫

বাড়ছে ইউরিক অ্যাসিড? এই ৩টি ঘরোয়া উপায়েই মিলবে স্বস্তি!

বর্তমানের ব্যস্ত জীবনযাত্রা, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও মানসিক চাপের কারণে ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির সমস্যা এখন অনেকের মধ্যেই দেখা দিচ্ছে। শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় পুরিন নামক একটি উপাদান ভেঙে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। সাধারণভাবে এটি রক্তে মিশে কিডনির মাধ্যমে মূত্রে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যখন শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড জমে যায় বা কিডনি ঠিকমতো তা ফিল্টার করতে পারে না, তখনই দেখা দেয় নানা শারীরিক সমস্যা।

একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় হাইপারইউরিকেমিয়া। এই অবস্থায় গেঁটে বাত, কিডনিতে পাথর, জয়েন্টে ব্যথা কিংবা ত্বকের নিচে জমাট বাঁধা গাঁট (Tophi) দেখা দিতে পারে। তবে প্রাথমিক অবস্থাতেই লক্ষণ চিহ্নিত করে কয়েকটি সহজ ঘরোয়া পদ্ধতি মেনে চললে এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

চলুন জেনে নিই ইউরিক অ্যাসিড কমাতে কার্যকর ৩টি ঘরোয়া উপায়।

১. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন
অনেকেই গুরুত্ব না দিলেও ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলোর একটি হলো পর্যাপ্ত পানি পান করা। পর্যাপ্ত জল শরীরকে হাইড্রেট রাখে এবং কিডনিকে ইউরিক অ্যাসিড মূত্রের মাধ্যমে বের করে দিতে সাহায্য করে। দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। চাইলে সাথে রাখতে পারেন ডাবের পানি কিংবা হালকা হারবাল চা।

২. খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন
খাবারের মাধ্যমেই শরীরে পুরিন প্রবেশ করে, যা ভেঙে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। তাই যেসব খাবারে পুরিন বেশি থাকে, সেগুলো পরিহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। যেমন: লাল মাংস, অঙ্গপ্রত্যঙ্গজাত মাংস (যেমন কলিজা), সামুদ্রিক মাছ, বিয়ার ও অন্যান্য অ্যালকোহল, চিনি বা উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার।
পিউরিনসমৃদ্ধ খাবার ইউরিক অ্যাসিড উৎপাদন বাড়ায়। 

তাই এই ধরনের খাবার যেমন লাল মাংস, অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মাংস (যেমন কলিজা), সামুদ্রিক মাছ, বিয়ার বা অন্যান্য অ্যালকোহল, চিনি ও চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। এর বদলে খাদ্যতালিকায় রাখুন তাজা ফল (বিশেষ করে চেরি ও লেবু জাতীয় ফল), শাকসবজি (টমেটো, গাজর, পালং), সম্পূর্ণ শস্য (বাদামী চাল, ওটস), কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার, বাদাম ও বীজজাত খাবার।

৩. নিয়মিত ব্যায়াম ও ওজন নিয়ন্ত্রণ
গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ওজনের সঙ্গে উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। শরীরে চর্বির পরিমাণ বাড়লে কিডনি ইউরিক অ্যাসিড ঠিকভাবে ফিল্টার করতে পারে না। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা খুবই জরুরি।

প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যায়াম করলেই রক্তসঞ্চালন ভালো থাকে, কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়ে এবং ইউরিক অ্যাসিড নিঃসরণে সাহায্য করে। ধীরে ধীরে শুরু করুন, তবে নিয়মিততা বজায় রাখুন।

ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা যদি অবহেলা করা হয়, তা হলে তা গেঁটে বাত কিংবা কিডনির সমস্যার মতো জটিল রোগে রূপ নিতে পারে। তবে সচেতনতা ও কয়েকটি ঘরোয়া অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমেই এই সমস্যাকে সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে দেরি না করে আগে থেকেই প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

আপনি যদি প্রায়ই ক্লান্তি, জয়েন্টে ব্যথা বা প্রস্রাবজনিত অস্বস্তি অনুভব করেন, তাহলে একবার ইউরিক অ্যাসিড পরীক্ষা করে নেওয়া জরুরি।

 


সূত্র:https://tinyurl.com/2cez37s4

আফরোজা

×