ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০২ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ফেলে দেওয়া কলাগাছের থোর যাচ্ছে ইউরোপে! রপ্তানি করে আসছে লক্ষ লক্ষ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা

মোঃ ইদুল ফিতর, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, নরসিংদী

প্রকাশিত: ১৬:০১, ৩১ মে ২০২৫; আপডেট: ১৬:০৯, ৩১ মে ২০২৫

ফেলে দেওয়া কলাগাছের থোর যাচ্ছে ইউরোপে! রপ্তানি করে আসছে লক্ষ লক্ষ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা

একসময় যেসব কলাগাছ কাটার পর ফেলে দেওয়া হতো ডোবা-নর্দমায়, এখন সেই ফেলে দেওয়া গাছের থোর বা মাইজা হয়ে উঠেছে টাকার খনি! রাজধানী ঢাকায় তো বটেই এখন রীতিমতো রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপের নানা দেশে। এই ‘বর্জ্য’ পণ্য বিক্রি করেই অনেকেই ঘুরিয়ে দিচ্ছেন নিজেদের ভাগ্যের চাকা, বয়ে আনছেন বৈদেশিক মুদ্রা।

‘সাগর কলা’ চাষের জন্য সুপরিচিত নরসিংদী সদর, পলাশ, মনোহরদীসহ বেশিরভাগ উপজেলায় চাষাবাদ হয় কলা। এখানকার অমৃত সাগর কলা ইতোমধ্যে ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে।

এই কলাগাছের ফল সংগ্রহের পর যে থোর অংশটি ফেলে দেওয়া হতো, এখন সেটিই রপ্তানি যোগ্য পণ্য। কৃষকেরা এখন সেই গাছ কেটে, উপরের অংশ ফেলে দিয়ে ১০ ইঞ্চি পরিমাপে থোর কাটেন, বস্তাবন্দি করে পাঠান ঢাকার শ্যামবাজার ও কারওয়ান বাজারে।

প্রতি পিচ থোর বিক্রি হয় ৬ থেকে ৮ টাকায়, আর রাজধানীতে তা বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ টাকা করে। এখানেই শেষ নয়, এই মাইজা প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানি করা হচ্ছে যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।

উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে প্রায় ৩৫-৪০ বছর ধরে এই ব্যবসায় যুক্ত রয়েছেন তারা। প্রতিদিন ৪০-৫০টি কলাগাছ সংগ্রহ করে বিকেলে তা থোরে রূপান্তর করে পিকআপে করে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

স্থানীয়দের মতে, এই ব্যবসা শুধু আয়ই আনছে না, বরং দেশীয় খাবার পৌঁছে দিচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দোরগোড়ায়। একদিকে যেমন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে বাড়ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

স্থানীয় উদ্যোক্তাদের দাবি, সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি খাতে পরিণত হতে পারে।

মিমিয়া

×