.
ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের (১৩৩তম) চেয়ে ৩৯ ধাপ এগিয়ে ইন্দোনেশিয়া (৯৪তম)। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথম দেখাতেই শক্তিশালী দলটিকে রুখে দিয়েছে ঋতুপর্ণা-মনিকারা। শনিবার রাতে জর্দানের আম্মানের কিং আবদুল্লাহ (২) স্টেডিয়ামে প্রথম প্রীতি ম্যাচে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। আক্রমণে, গোলের সুযোগ তৈরিতে এগিয়ে থেকেও কেবল গোলটাই পাওয়া হয়নি।
ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করা বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল এবার স্বাগতিক জর্দানের বিপক্ষে আরও ভালো করতে চায়। প্রথম ম্যাচ খেলার পর রবিবার ফুটবলাররা রিকভারি সেশন করেছেন। জিম ও সুইমিং করে বিশ্রামে আফঈদা খন্দকার-ঋতুপর্ণা চাকমারা। জর্দান থেকে ভিডিওবার্তায় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ড্র করায় নিজেরা খুশি উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা যা চেয়েছিলাম তাই পেরেছি। ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ড্র করতে পেরে আমরা খুশি। কোচের নির্দেশনা অনুযায়ী খেলতে পারার কারণেই আমরা ম্যাচটি ড্র করতে পেরেছি। সোমবার থেকে আবার অনুশীলনে নামবো জর্দানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের জন্য।’ শক্তিতে বেশ এগিয়ে থাকা ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ড্র করে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে নারী ফুটবলারদের। তাই মঙ্গলবার জর্দানের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে আরো ভালো করতে চান আফঈদা। অর্থাৎ জয় চান বাংলার অধিনায়ক।
পিটার বাটলারের এই পরিবর্তিত দলটি দুই ম্যাচের একটি ড্র করে আরেকটি জিতে ফিরতে পারলে সেটা ভালো ফলই হবে। সাবিনা খাতুনসহ সিনিয়র ৫ ফুটবলার বাদ দিয়ে পিটার যে সমালোচনার মুখে পড়েছেন, সেই জায়গায় কোচ নিজেকে সফল হিসেবেই উপস্থাপন করতে পারবেন। তার চেয়ে বড় কথা, জর্ডান সফরের দুই ম্যাচের একটিও না হারলে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের আগে দুর্দান্ত প্রস্তুতিও হয়ে যাবে মনিকা-ঋতুপর্ণাদের। ২৩ জুন থেকে ৫ জুলাই মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ‘সি’ গ্রুপের খেলা। মিয়ানমার ছাড়াও এই প্রতিযোগিতায় অন্য দুই দল বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান।
ঋতুপর্ণা-স্বপ্নাদের পারফর্ম্যান্সে খুশি কোচ পিটার বাটলার, ‘মেয়েরা ব্রিলিয়ান্ট ফুটবল খেলেছে। আমরা কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করেছি, কিন্তু যেভাবে ওরা নিচ থেকে খেলা তৈরি করেছে, বিল্ড-আপ গেম খেলেছে, তাদের নিয়ে আমি আসলেই ভীষণ গর্বিত। আমি মনে করি, তারা ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে অসাধারণ, দুর্দান্ত খেলেছে। জর্দান ম্যাচ নিয়েও আমি আত্মবিশ্বাসী।’ ইংলিশ কোচ আরও বলেন,‘আমি ভালো ফুটবল খেলতে চাই। ঋতুপর্ণা, মনিকা, মারিয়া, স্বপ্না আসলেই ভালো খেলেছে। সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা যে সপ্তাহের পর সপ্তাহ খেলার মধ্যে ছিল না, সেটা আমি বিবেচনায় নেইনি। দলের মধ্যে যে শৃঙ্খলা, নিবেদন আমি সবসময় দেখতে চেয়েছি, মেয়েরা সেটা দেখিয়েছে। তারা বাংলাদেশকে গর্বিত করেছে।’
ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে শুরু থেকেই মেয়েরা ছিল আত্মবিশ্বাসী। ম্যাচে ইন্দোনেশিয়া গোলের জন্য ৯ শটের মাত্র ৪টি লক্ষ্যে রাখতে পারে। বাংলাদেশ ১৫টি শটের ৭টি রাখে লক্ষ্যে, তবুও মেলেনি গোল। দুইবারের উইমেন’স সাফ জয়ী রুপনা ছিলেন পোস্টে বিশ্বস্ত দেওয়াল হয়ে। ৮০তম মিনিটে ওক্তাভিয়ানি রেভার শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে কোনোমতে আটকান তিনি। একটু পর পাল্টা আক্রমণে ওঠা ঋতুপর্ণা চাকমার শট নেওয়ার আগেই ক্লিয়ার করেন ইন্দোনেশিয়ার এক ডিফেন্ডার। ৮৭তম মিনিটে ঋতুপর্ণার ফ্রি কিক অল্পের জন্য পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। হতাশায় মুখ ঢাকেন ডাগআউটে থাকা কোচ, কোচিং স্টাফরা। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে বড় বাঁচা বেঁচে যায় বাংলাদেশ। আক্রমণ আটকাতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন রুপনা চাকমা, কিন্তু সতীর্থের পাস ধরে ক্লাওদিয়া আলেকসান্দারা ফাঁকা পোস্টে শট নিলেও বল পোস্ট কাঁপিয়ে ফেরে।
প্যানেল
