ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বৃষ্টির দিনে বিপদ নয়, হোক নিরাপত্তা এবং স্টাইলের উৎসব ও চলাচল

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৪৫, ২ জুন ২০২৫

বৃষ্টির দিনে বিপদ নয়, হোক নিরাপত্তা এবং স্টাইলের উৎসব ও চলাচল

ছবি: সংগৃহীত

আকাশ কালো, বাতাসে ভেজা ভেজা গন্ধ, আর হঠাৎ নেমে আসা এক পশলা বৃষ্টি—প্রকৃতির এমন আহ্বান উপেক্ষা করা যায় না। কিন্তু শহরজীবনের বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। বৃষ্টির দিনে কর্মজীবী মানুষদের জন্য রাস্তায় নামা মানেই শুরু হয় এক ‘চ্যালেঞ্জ কনসার্ট’।

ভিজে যাওয়া, পা পিছলে যাওয়া, যানজটে আটকে পড়া কিংবা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যাওয়া—এগুলো যেন বর্ষাকালের নিত্যদিনের গল্প। অথচ একটু সচেতনতা, পরিকল্পনা ও সঠিক উপায় জানা থাকলেই এই গল্পটা হতে পারে সুন্দর, ঝামেলামুক্ত এবং স্মরণীয়।

আজকের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো বৃষ্টির দিনে নিরাপদ, আরামদায়ক ও স্টাইলিশ চলাচলের জন্য ১২টি সেরা পরামর্শ, যা বিশেষজ্ঞ, অভিজ্ঞ ব্যবহারকারী এবং আবহাওয়া বিশ্লেষকদের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তুত।

 ১. প্রস্তুতি শুরু হোক ব্যাগ থেকেই

রেইনকোট, ছোট ছাতা, ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ কভার—এই তিনটি জিনিস রাখুন প্রতিদিনের ব্যাগে। আপনার দিনটা বৃষ্টি হোক বা না হোক, প্রস্তুত থাকলে আপনি থাকবেন সবসময় এগিয়ে।

 ২. ওয়াটারপ্রুফ জুতা – কেবল রক্ষা নয়, আরামও

পানি প্রতিরোধক রাবার সোলের জুতা বা স্যান্ডেল ব্যবহার করলে পা শুকনো থাকে, আর রাস্তার কাদা ও পিচ্ছিলতা থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। চাইলে এখনকার ফ্যাশনেবল ওয়াটারপ্রুফ বুটও পরতে পারেন, যা স্টাইলেও মানানসই।

৩. ফ্যাশনেবল রেইন গিয়ার – ছাতা হোক এক্সপ্রেশন!

একটা সুন্দর, হালকা ও সহজে বহনযোগ্য ছাতা আপনার চলাফেরার সঙ্গী হতেই পারে। পকেট ছাতা, সেলফ-ফোল্ডিং ছাতা, বা উইন্ড-প্রুফ ডিজাইন এখন বাজারে সহজলভ্য।

 ৪. গন্তব্যে পৌঁছাতে হাঁটা নয়, প্ল্যান করুন স্মার্টলি

বৃষ্টির দিনে বাসা থেকে বের হওয়ার আগে গুগল ম্যাপ বা স্থানীয় ওয়েদার অ্যাপ চেক করুন। কোন রাস্তায় পানি জমে, কোনদিকে বেশি ট্রাফিক—এসব জানা থাকলে চলাফেরায় গতি বাড়ে।

৫. রাইড শেয়ার বা পাবলিক ট্রান্সপোর্টের সদ্ব্যবহার

ওয়েটিং পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ভিজে যাওয়ার বদলে অ্যাপভিত্তিক বাইক, সিএনজি বা ট্যাক্সি ব্যবহার করুন। দরকার হলে কিছুটা আগে বের হন যাতে সময়সীমার চাপে না পড়েন।

 ৬. ইলেকট্রনিক ডিভাইসের জন্য ওয়াটারপ্রুফ পাউচ

মোবাইল, ট্যাব, পাওয়ার ব্যাংক ইত্যাদি ডিভাইস রাখুন ওয়াটারপ্রুফ কেস বা জিপ-লক ব্যাগে। এই ছোট সচেতনতাই আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডেটা বা ডিভাইস বাঁচাতে পারে।

৭. অতিরিক্ত মোজা ও হালকা তোয়ালে রাখুন ব্যাগে

হাঁটতে হাঁটতে পা ভিজে গেলে ভোগান্তি শুরু হয় অফিসেই। অতিরিক্ত এক জোড়া মোজা আর তোয়ালে আপনার আরামের জন্য অপরিহার্য।

 ৮. শিশুদের জন্য আলাদা রেইন কিট

স্কুলগামী শিশুদের জন্য রঙিন রেইনকোট, ছোট ছাতা ও ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগ আবশ্যক। তারা যেন ভিজে না যায় এবং আনন্দ নিয়েই স্কুলে যেতে পারে।

 ৯. বিদ্যুৎ ও শর্টসার্কিট থেকে সাবধান

পানিভর্তি রাস্তার ধারে বৈদ্যুতিক খুঁটি বা তার থাকলে তা থেকে দূরে থাকুন। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করুন।

১০. উঁচু রাস্তা বেছে নিন, নিচু রাস্তায় ঝুঁকি বেশি

ঢাকার বেশ কিছু নিচু এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে। সেইসব রুট এড়িয়ে চলে বিকল্প রুট ব্যবহার করুন—যেমন র‍্যাম্প ওয়াল রোড, লেভেল ক্রসিং ফ্রি এলাকা ইত্যাদি।

 ১১. মানসিক প্রস্তুতি: বৃষ্টি মানেই সমস্যা নয়!

মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন—বৃষ্টি মানেই অস্বস্তি নয়, বরং এক ধরনের প্রশান্তি ও ছন্দ। নিজের সময়কে গুছিয়ে নিলে আপনার দিনটাই বদলে যাবে।

১২. বৃষ্টির সুরে হাঁটুন, না থাকুক কোনো ঝামেলা
হেডফোনে হালকা সঙ্গীত, ব্যাগে গরম কফির ফ্লাস্ক আর ছাতার নিচে আপনার ছায়া—এই চিত্রটাই তো বর্ষার আসল সৌন্দর্য।

প্রতিদিনের রুটিনে একটু বুদ্ধি আর প্রস্তুতি যোগ করলেই বৃষ্টির দিনগুলো হবে আনন্দদায়ক, স্মারক ও ঝুঁকিমুক্ত। ‘ভিজে যাব, দেরি হবে, নষ্ট হবে’ এই ভয়কে পেছনে ফেলে বর্ষাকেও উপভোগ করুন—নিরাপদে, সচেতনতায় এবং স্টাইলের সঙ্গে।

Mily

×