ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

উপকূলে ভেসে এল দুর্লভ ও বিশালাকার ‘ডুমসডে’ ওয়ারফিশ, বিশ্বজুড়ে কৌতূহল

প্রকাশিত: ১৫:২৩, ৩ জুন ২০২৫

উপকূলে ভেসে এল দুর্লভ ও বিশালাকার ‘ডুমসডে’ ওয়ারফিশ, বিশ্বজুড়ে কৌতূহল

ছবি: সংগৃহীত।

গভীর সমুদ্রের এক রহস্যময় বাসিন্দা, দৈর্ঘ্যে আট মিটার পর্যন্ত হতে পারে এই ‘রাজা হেরিংস’-এর।

তাসমানিয়ার বন্য পশ্চিম উপকূলে একটি অত্যন্ত বিরল এবং বিস্ময়কর ওয়ারফিশ ভেসে এসেছে। আট মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এমন এই সামুদ্রিক প্রাণীটিকে অনেকেই ‘কিং অফ হেরিংস’ বা কখনো কখনো কুসংস্কারে ‘ডুমসডে ফিশ’ নামেও অভিহিত করে, কারণ বহু সংস্কৃতিতে একে দুর্যোগের পূর্বাভাস হিসেবে দেখা হয়।

সোমবার (২ জুন) সকালে সিবিল রবার্টসন নামে এক মহিলা যখন স্ট্রাহানের কাছে ওশান বিচে হাঁটছিলেন, তখন তিনি সৈকতের বালিতে একটি বিশাল রূপালি মাছ পড়ে থাকতে দেখেন।

“আমি যখন ওই সৈকতে যাই, প্রায়ই আমি একাই থাকি। এখানে থেকে সোজা আর্জেন্টিনা পর্যন্ত আর কিছু নেই,” বলেন সিবিল। “সেদিন অন্যদিকে হাঁটছিলাম। তখন দেখি কিছু সমুদ্র ঈগল মাছটি ঘিরে আছে।”

তিনি জানান, মাছটির দৈর্ঘ্য আনুমানিক তিন মিটার ছিল। “আমি পাঁচ ফুট নয় ইঞ্চি লম্বা। তিনটি বড় পা ফেলে ওর দৈর্ঘ্য মেপেছিলাম। এটা বিশাল ছিল।”

প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি কী ধরনের মাছ এটি। তবে Citizen Scientists of Tasmania-র ফেসবুক গ্রুপে ছবি পোস্ট করার পর দ্রুত এটি চিহ্নিত হয় ওয়ারফিশ হিসেবে।

তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক জীববিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নেভিল ব্যারেট বলেন, “এটা অত্যন্ত বিরল ঘটনা। ওয়ারফিশ হলো একটি ইপিপেলাজিক প্রজাতি, যারা সাধারণত ১৫০ থেকে ৫০০ মিটার গভীরতায় থাকে।”

“আমরা সাধারণত ওই গভীরতায় থাকি না—না ডুব দিই, না মাছ ধরি। ফলে এদের দেখা পাওয়া অত্যন্ত কঠিন,” বলেন তিনি।

ব্যারেট আরও জানান, ওয়ারফিশ সাধারণত অনেক বড় হয়—ওজন ৪০০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। তারা তুলনামূলক অলস মাছ, শক্তিশালী সাঁতারু নয়। উল্লম্বভাবে জলের মধ্যে ভেসে থাকে এবং প্ল্যাঙ্কটনের মতো ক্ষুদ্র খাবার খায়।

২০২২ সালে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে প্রথমবারের মতো একটি কিশোর ওয়ারফিশ দেখা যায়, যা ছিল অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে এই প্রজাতির প্রথম নথিভুক্ত দর্শন। এটি দেখেন সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী জর্জা গিলমোর, যিনি বলেন, “ওটা ছিল যেন এক দৈত্যাকার মাছের টোপ।”

সিবিল রবার্টসনের মতে, মাছটি যখন তিনি দেখেন তখন এটি ছিল ভালো অবস্থায়। তবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এর মাথা ছিল না এবং দেহ ঈগল ও কাকের আক্রমণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।

তিনি বলেন, “চোখ খোলা রাখলেই কত অদ্ভুত কিছু দেখা যায়। এটা একেবারেই অসাধারণ অভিজ্ঞতা।”

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

মিরাজ খান

×